- শিল্প-বাণিজ্য
- ক্রেমলিনে হামলায় মস্কো দুষছে ওয়াশিংটনকে
ক্রেমলিনে হামলায় মস্কো দুষছে ওয়াশিংটনকে

ক্রেমলিনে ড্রোন হামলা চালিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে হত্যাচেষ্টার পেছনে যুক্তরাষ্ট্র কলকাঠি নেড়েছে বলে অভিযোগ করেছে মস্কো। এই পরিকল্পনা কিয়েভে নয়, বরং ওয়াশিংটনে নেওয়া হয়েছিল বলেও দাবি দেশটির। এদিকে, রাশিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ওই স্থাপনায় হামলার জেরে কিয়েভসহ ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি শহরে ফের ব্যাপক ড্রোন হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। এতে খেরসনে মৃত্যু হয়েছে ২৩ জনের, আহত হয়েছেন অর্ধশত মানুষ। খবর আলজাজিরা ও এএফপির।
এদিকে, হামলায় জড়িত থাকার কথা সরাসরি অস্বীকার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি বৃহস্পতিবার বলেন, এর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সম্পর্ক নেই। হামলার পর প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র। এর পরই ইউক্রেনজুড়ে আক্রমণ বাড়ায় রুশ বাহিনী। ক্রেমলিনে হামলার ঘটনার জরুরিভাবে তদন্ত চলছে বলেও জানান পেসকভ।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর সন্ত্রাসী ও নাশকতামূলক কার্যক্রম নজিরবিহীন গতি পাচ্ছে। ফলে এর প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার রয়েছে রাশিয়ার। ক্রেমলিনে ড্রোন হামলাই প্রমাণ করে যুদ্ধ বন্ধে আলোচনার টেবিলে বসতে কিয়েভের কোনো আগ্রহ নেই।
কিয়েভের প্রশাসন জানিয়েছে, বুধবার রাতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পাশাপাশি ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। তবে সেগুলো ভূপাতিত করা হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলীয় কর্মকর্তা জানান, ওডেসায় ১৫টি রুশ ড্রোনের মধ্যে ১২টি ভূপাতিত করা হয়েছে। তবে অন্য তিনটি ড্রোন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আঘাত হেনেছে। টেলিগ্রাম চ্যানেলে দেশটির বিমানবাহিনী জানিয়েছে, ২৪টি রুশ ড্রোনের মধ্যে ১৮টি ভূপাতিত করা হয়েছে। এর অধিকাংশই ইরানের তৈরি কামিকাজে ড্রোন।
জ্বালানি মন্ত্রণালয় জানায়, দোনেৎস্ক অঞ্চলে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আঞ্চলিক গভর্নর ওলেক্সান্ডার প্রোকুদিন বলেন, দক্ষিণ ইউক্রেনের খেরসন এবং এর আশপাশে একটি হাইপারমার্কেট, রেলওয়ে স্টেশন এবং আবাসিক ভবনে হামলা চালানো হয়েছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘বসবাসের জায়গাগুলোই শত্রুদের টার্গেটে পরিণত হয়েছে। তাঁদের লক্ষ্য আমাদের জীবন এবং আমাদের শিশুদের জীবন।’ তবে, ইউক্রেনে বেসামরিক নাগরিকদের টার্গেট করার কথা অস্বীকার করেছে রাশিয়া।
এদিকে, আরও হামলার আশঙ্কায় ৫৬ ঘণ্টার কারফিউর জারি করেছে খেরসন প্রশাসন। স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে এ নির্দেশনা কার্যকর হবে। তবে তার আগে বাসিন্দারা খাদ্য ও পানি মজুত করেন। এরই মধ্যে অনেকে ঠাঁই নিয়েছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। আবার কেউ কেউ পরিবার-পরিজন পাঠিয়ে দিয়েছেন শহরের বাইরে। তাঁরা বলছেন, সামনের দিনগুলোতে আরও বড় হামলা হতে পারে। কারণ, রুশ বাহিনীর অবস্থানে গোলাবর্ষণ বাড়িয়েছে ইউক্রেনীয় সেনারা।
রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে বৃহস্পতিবার ড্রোন হামলা হয়েছে একটি তেল শোধনাগারে। এতে আগুন লেগে গেলে দ্রুত তা নিভিয়ে ফেলা হয়। কর্মকর্তারা এটিকে ড্রোন দুর্ঘটনা বলে দাবি করেছেন।
এরই মধ্যে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বৃহস্পতিবার নেদারল্যান্ডসের হেগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত গতকাল পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তিনি বলেন, যুদ্ধের জন্য পুতিনকে অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। এটা আমাদের ঐতিহাসিক দায়িত্ব।
মন্তব্য করুন