- শিল্প-বাণিজ্য
- ডিএসইর লেনদেন হাজার কোটি টাকা পার
শেয়ারবাজার
ডিএসইর লেনদেন হাজার কোটি টাকা পার
সাড়ে ছয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) শেয়ার কেনাবেচার পরিমাণ আরও বেড়ে হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। বুধবার এ বাজারে কেনাবেচা হয়েছে ১ হাজার ১১০ কোটি টাকা মূল্যের শেয়ার, যা গত সাড়ে ছয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর তুলনায় বেশি লেনদেন হয়েছিল গত বছরের ৮ নভেম্বর। ওই দিন কেনাবেচা হয়েছিল ১ হাজার ৪৯৪ কোটি টাকার শেয়ার। পরদিন ৯ নভেম্বর প্রায় ১ হাজার ৯ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেনের পর ১৩০ কার্যদিবসে কখনোই লেনদেন হাজার কোটি টাকা পার হয়নি।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে দরবৃদ্ধির সঙ্গে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কোম্পানি ফ্লোর প্রাইস ছেড়ে উঠে আসায় নতুন করে বিনিয়োগে আগ্রহ বেড়েছে অনেকের। এ কারণে লেনদেনও বাড়ছে। তবে এখনও ডিএসইতে ফ্লোর প্রাইসে পড়ে থাকা শেয়ার সংখ্যা ২১৫টি, যা মোটের প্রায় ৫৫ শতাংশ।পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গতকালের লেনদেন বৃদ্ধিতে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সেবা, নির্মাণ, পাট এবং বিবিধ খাত ছাড়া বাকি ১৫ খাতের কম-বেশি অবদান ছিল। মঙ্গলবারের তুলনায় সর্বাধিক ৮০ কোটি টাকার লেনদেন বেড়ে বীমা খাতে কেনাবেচা হয়েছে ২৬৩ কোটি টাকা, যা মোট লেনদেনের পৌনে ২৪ শতাংশ । এ ছাড়া খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে লেনদেন পৌনে ৪৪ কোটি টাকা বেড়ে প্রায় ১২৮ কোটি টাকা হয়েছে। এ ছাড়া ওষুধ ও রসায়ন, বস্ত্র এবং জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের লেনদেন বেড়েছে।
ব্লক মার্কেটের ৫২ কোটি টাকার লেনদেন নিয়ে একক কোম্পানি হিসেবে লেনদেনের শীর্ষে ছিল সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক। তবে পাবলিক মার্কেটের লেনদেনে ভর করে নাভানা ফার্মার সোয়া ৩৭ কোটি টাকার লেনদেন ছিল দ্বিতীয় অবস্থানে। পরের অবস্থানে ইন্ট্রাকো সিএনজি রিফুয়েলিংয়ের সাড়ে ৩৫ কোটি টাকা, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের সাড়ে ৩০ কোটি টাকা, জেমিনি সি ফুড ও এমারেল্ড অয়েলের সাড়ে ২৫ কোটি টাকা করে লেনদেন হয়।
পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, আগের দিনের ধারাবাহিকতায় গতকাল সকাল ১০টায় লেনদেন শুরু হয় বেশ চাঙ্গা ভাবে। প্রথম ঘণ্টায় কেনাবেচা হয় ৩২৭ কোটি টাকার শেয়ার, যা মোট লেনদেনের সাড়ে ২৯ শতাংশ। পরের তিন ঘণ্টার লেনদেন ক্রমে কমে ২৫৪ কোটি টাকা, ২০১ কোটি টাকা এবং ১৯২ কোটি টাকায় নামে। ক্লোজিং সেশনসহ শেষ আধা ঘণ্টায় কেনাবেচা হয় ১৩৭ কোটি টাকার শেয়ার।
সময় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে লেনদেন কমার কারণ হলো, শুরুতে অধিকাংশ শেয়ারের দর বাড়লেও বিক্রির চাপে ক্রমে শেয়ারগুলো দর হারায়। যেমন প্রথম ঘণ্টা লেনদেন শেষে ১৪০ শেয়ারের দরবৃদ্ধির বিপরীতে মাত্র ২৮টি দর হারিয়ে কেনাবেচা হয় এবং দর অপরিবর্তিত অবস্থায় ছিল ১৪১টি। লেনদেন শেষে দেখা যায়, কেনাবেচা হওয়া ৩৬৪ শেয়ারের মধ্যে ৭৪টির দর বেড়েছে, কমেছে ৯৯টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ১৯১টির দর। ক্রেতার অভাবে ফ্লোর প্রাইসে ২৮ শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের কেনাবেচা হয়নি।
এ ছাড়া অধিকাংশ শেয়ারের দরবৃদ্ধি পাওয়ায় বেলা সোয়া ১১টায় ডিএসইএক্স সূচক ১৯ পয়েন্টের বেশি বেড়ে গত ১০ নভেম্বরের পর সর্বোচ্চ ৬৩২৫ পয়েন্টে উঠেছিল। কিন্তু ক্রমে শেয়ারদর কমায় শেষ পর্যন্ত আগের দিনের তুলনায় প্রায় তিন পয়েন্ট কমে সূচক ৬৩০৫ পয়েন্টে দাঁড়ায়।
গতকালও ডিএসইতে ৯ কোম্পানির শেয়ার সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দরে কেনাবেচা হয়। এগুলো হলো– এমারেল্ড অয়েল, মেঘনা কনডেন্ডস মিল্ক, মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ, নাভানা ফার্মা, নর্দার্ন জুট, ন্যাশনাল টি, প্রগতি লাইফ, ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ এবং ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স। এসব শেয়ারের দর পৌনে ৯ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। বিপরীতে প্রায় ৯ শতাংশ দর হারিয়ে দর হারানোর শীর্ষে ছিল প্রিমিয়ার ব্যাংক। প্রায় ৯ শতাংশ দর হারিয়ে এর পরের অবস্থানে ছিল মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক। এ ছাড়া ওরিয়ন ইনফিউশনস, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স এবং ওইম্যাপ ইলেক্ট্রোডের শেয়ারদর ৬ শতাংশের বেশি কমেছে।
মন্তব্য করুন