- শিল্প-বাণিজ্য
- বাজেটে সংকট সমাধানের উদ্যোগ নেই
বিভিন্ন দল ও সংগঠনের প্রতিক্রিয়া
বাজেটে সংকট সমাধানের উদ্যোগ নেই

প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটকে ‘স্বজনতোষী’, ‘জনস্বার্থবিরোধী’ ও ‘দুর্নীতিবান্ধব’ আখ্যা দিয়ে এর বিরোধিতা করেছে বিভিন্ন দল ও সংগঠন। শুক্রবার পৃথক বিবৃতিতে এসব দল ও সংগঠনের নেতারা বলেছেন, বাজেটে সাধারণ মানুষ একেবারে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে। দেশের চলমান সংকট সমাধানে দিকনির্দেশনা বা কোনো উদ্যোগ নেই।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘কয়েক কোটি দরিদ্র, বেকার ও পুষ্টিহীন মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বিশাল বাজেটে কোনো পরিকল্পনা গৃহীত হয়নি। দেশের সাধারণ মানুষ রাষ্ট্রের কাছে অপ্রয়োজনীয় ও অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে। মুদ্রাস্ফীতি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও কর্মসংস্থানহীনতায় কোটি কোটি মানুষের জীবন আরও বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।’
বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া ও সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান পৃথক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘রাজনৈতিক সংকট নিরসন করে জবাবদিহিমূলক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি না থাকায় এ বাজেট কোনো ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে না। বাজেটে আশার কোনো আলো নেই।’
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এটি স্বজনতোষী ও দুর্নীতিবান্ধব বাজেট। এতে দেশের চলমান অর্থনৈতিক সংকট সমাধানের কোনো উদ্যোগ বা দিকনির্দেশনা নেই।’ তিনি বলেন, ‘আয় না থাকলেও টিআইএনধারীদের ২ হাজার টাকা পরিশোধ জনগণের পকেট কাটার উদ্যোগ। এ সরকার থাকলে জনগণের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হবে না।’
পলিটব্যুরোর সদস্য কামরুল আহসান স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে ওয়ার্কার্স পার্টির অবস্থান তুলে ধরে বলা হয়েছে, বাজেটে বর্তমানের দুঃস্বপ্ন মোচনের বিশেষ কোনো কথা নেই। কৃষি, জ্বালানি, পরিবহনের মতো অর্থনীতির মূল খাতে বরাদ্দ বাড়লেও ভর্তুকি হ্রাস করার সিদ্ধান্তের দায়ভার জনগণের ওপর বর্তাবে। আইএমএফের শর্ত মানতে জনগণকে কষ্ট দেওয়ার কোনো অবকাশ নেই।
বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ বাজেট জনগণের ওপর করের বোঝা চাপানোর গণবিরোধী বাজেট। এটি ব্যবসাবান্ধব বাজেট। আইএমএফের শর্তে জনদুর্ভোগ বৃদ্ধির এ বাজেট সংশোধন করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষিসহ জনকল্যাণমূলক খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে সই করেছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, কেন্দ্রীয় নেতা মোহাম্মদ শাহ আলম, রুহিন হোসেন প্রিন্স প্রমুখ।
গণতন্ত্র মঞ্চের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের বিবৃতিতে বলা হয়, বাজেটে সরকারের বেসামাল অবস্থারই প্রতিফলন ঘটেছে। বাজেটে জীবনযাত্রার অসহনীয় ব্যয়ভার ও বাজারের আগুনে পুড়তে থাকা সাধারণ মানুষের জন্য স্বস্তির কোনো খবর নেই। উল্টো নতুন নতুন দুর্যোগের আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে।
জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম বিবৃতিতে বলেছেন, আইএমএফের কাছ থেকে শর্তযুক্ত ঋণ নিয়ে শেখ হাসিনার সরকার বাজেটের মাধ্যমে এ ঋণের বোঝা জনগণের ঘাড়ের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। এ বাজেট প্রত্যাখ্যাত হবে।
উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বিবৃতিতে বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেট সাংস্কৃতিক জাগরণের অনুকূল নয়। সংস্কৃতিকর্মীদের দাবির আলোকে এ খাতে ন্যূনতম ১ শতাংশ বরাদ্দের দাবি জানান তাঁরা।
প্রস্তাবিত বাজেট প্রত্যাখ্যান করে আরও বিবৃতি দিয়েছেন বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টের সভাপতি বজলুর রশীদ ফিরোজ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস প্রমুখ।
/এসআর/
মন্তব্য করুন