ঢাকা শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

জাপোরিঝিয়া নিয়ে শঙ্কায় জাতিসংঘ

জাপোরিঝিয়া নিয়ে শঙ্কায় জাতিসংঘ

জাপোরিঝিয়ায় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ | ১২:০০ | আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ | ২৩:০১

ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়ায় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ক্রমাগত গোলাবর্ষণের কারণে এ অঞ্চলে বিপুল পরিমাণ তেজস্ট্ক্রিয় পদার্থ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটি বলছে, সেখানে রাশিয়ার সামরিক সরঞ্জামের উপস্থিতি কেন্দ্রটির নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে। গত সপ্তাহে জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইএইএ কেন্দ্রটি পরিদর্শন করার পর প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে জাপোরিঝিয়ায় গোলাবর্ষণ থামানো এবং সেখানে একটি নিরাপত্তা ও সুরক্ষা অঞ্চল তৈরির আহ্বান জানানো হয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদোমির জেলেনস্কি এই প্রতিবেদনকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, 'পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে সামরিক সরঞ্জামের উপস্থিতি সেখানে আমাদের কর্মীদের জন্য একটি চাপ।' জেলেনস্কি বলেন, 'পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অঞ্চল' বেসামরিকীকরণ হলে তিনি নিরাপত্তা জোন তৈরির বিষয়টি সমর্থন করবেন।

ইউক্রেনে আগ্রাসনের শুরুর দিকেই জাপোরিঝিয়া পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের দখল নেয় রাশিয়া। ইউরোপের বৃহত্তম এ কেন্দ্রটি ডিনিপার নদীর দক্ষিণ তীরে ইউক্রেন নিয়ন্ত্রিত শহর এবং সামরিক অবস্থানের কাছেই। উভয় পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে কেন্দ্রটিকে লক্ষ্যবস্তু করার অভিযোগ তুলেছে। গত মঙ্গলবার রাশিয়া কিয়েভের বিরুদ্ধে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিন দফায় ওই এলাকায় হামলার অভিযোগ এনেছে। অন্যদিকে ইউক্রেন বলেছে, আশপাশের শহরগুলোতে গুলি চালানোর জন্য রুশ বাহিনী কেন্দ্রটিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে।

তবে রাশিয়ার দাবি, তারা কেন্দ্রটি পাহারা দিচ্ছে। এ দিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভদ্মাদিমির পুতিন বলেছেন, পশ্চিমারা তাদের মত বিশ্বের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু তাদের ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে। বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির কেন্দ্র এখন এশিয়া। পশ্চিমা অর্থনীতির ব্যর্থতা এবং তাদের আগ্রাসী চেষ্টা এশিয়ার ক্রমবর্ধমান দেশগুলোর ভবিষ্যৎ হিসেবে সামনে হাজির করার চেষ্টা চলছে। বুধবার রাশিয়ার ভদ্মাদিভস্তকে ইস্টার্ন ইকোনমিক ফোরামে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। পুতিন বলেন, পশ্চিমাদের অর্থনৈতিক 'আগ্রাসন' মোকাবিলা করছে রাশিয়া। তাদের নিষেধাজ্ঞার জন্য ইউরোপীয়দের জীবনযাত্রার মান কমেছে।

অন্যদিকে দরিদ্র দেশগুলো খাদ্য সংগ্রহ করতে পারছে না। ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য রপ্তানি নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ করেন পুতিন। রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, এখন পর্যন্ত মাত্র দুটি খাদ্যশস্যের জাহাজ আফ্রিকায় গেছে। সেগুলো দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোয় পাঠানো হয়নি, বরং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোয় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই যুদ্ধ থেকে আরও শক্তিশালী সার্বভৌমত্ব নিয়ে রাশিয়া ঘুরে দাঁড়াবে- এমন প্রত্যয় ব্যক্ত করে পুতিন বলেন, 'বহু কোম্পানি রাশিয়া ছাড়তে তোড়জোড় শুরু করেছিল। কিন্তু এখন আমরা দেখছি, কীভাবে ইউরোপে একের পর এক কারখানা ও কর্মসংস্থান বন্ধ হচ্ছে। জনগণের চোখের সামনেই ডলার, ইউরো ও পাউন্ডের ওপর থেকে আস্থা সরে যাচ্ছে। আমরা কিছুই হারাইনি এবং কিছুই হারাব না।'

এ দিকে উত্তেজনার মধ্যেই আগামী সপ্তাহে উজবেকিস্তানে বৈঠকে মিলিত হবেন ভদ্মাদিমির পুতিন ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ শুরুর পর এটিই হবে দুই নেতার প্রথম বৈঠক। চীনে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত আন্দ্রেই ডেনিসভ বলেছেন, উজবেক শহর সমরখন্দে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন সামিটে পুতিন ও শি জিনপিং বৈঠক করবেন। সম্মেলন ১৫-১৬ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। রুশ সংবাদমাধ্যমের খবরে সমরখন্দের বৈঠকের ব্যাপারে নিশ্চিত করা ছাড়াও চীনা প্রেসিডেন্ট কাজাখস্তান সফর করতে পারেন বলে জানানো হয়েছে।

ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ সংকটের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছে রাশিয়া। মঙ্গলবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে দাবি করে- ইউরোপকে মস্কোর সঙ্গে অর্থনৈতিক ও জ্বালানি সহযোগিতা কমানোর 'আত্মঘাতী' পদক্ষেপের
দিকে ঠেলে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে ইউরোপে জ্বালানির দাম বেড়েছে এবং দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সাধারণ মানুষ।

আরও পড়ুন

×