সবুজ জ্বালানিতে ঝুঁকছে বিশ্ব
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০২২ | ১২:০০ | আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২২ | ২২:১৫
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন পরিবেশের জন্য শাপে বর হতে পারে। এ যুদ্ধের ফলে ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ চরম জ্বালানি সংকটে পড়ে। ফলে সংকট কাটাতে দেশগুলো জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নিজেদের নির্ভরশীলতা কমিয়ে বায়ু, সৌর ও বৈদ্যুতিক যানের মতো সবুজ প্রযুক্তির দিকে ঝুঁকেছে। বাড়িয়েছে সবুজ জ্বালানির ওপর নির্ভরতা। যদিও কিছু দেশ প্রাকৃতিক গ্যাস সংকটের কারণে কয়লার মতো জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বাড়িয়ে দেয়। গতকাল বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থার (আইইএ) প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়। খবর বিবিসি ও আলজাজিরার।
আইইএ জানিয়েছে, অদূর ভবিষ্যতে বিশ্বব্যাপী সব ধরনের জীবাশ্ম জ্বালানির চাহিদা বাড়বে। কারণ অনেক দেশে জীবাশ্ম জ্বালানির দাম বাড়ায় চলতি বছরে বায়ু টারবাইন, সৌর প্যানেল, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, হাইড্রোজেন জ্বালানি, বৈদ্যুতিক যান ও বৈদ্যুতিক তাপ পাম্প প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র এসব প্রযুক্তির জন্য ৩৭০ বিলিয়নেরও বেশি ডলারের প্রকল্প নিয়েছে। জাপানও একই ধরনের প্রকল্প গ্রহণ করেছে। চীন, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়া সবাই নবায়নযোগ্য এবং পারমাণবিক জ্বালানির দিকে ঝুঁকছে।
আইইএ আরও জানিয়েছে, দেশগুলোর নীতির কারণে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বিশ্বব্যাপী কয়লার ব্যবহার কমতে শুরু করবে। আর প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদা হবে আকাশচুম্বী। তবে ২০৩০ এর মাঝামাঝি তেলের ব্যবহার কমবে। বর্তমানে সবুজ জ্বালানিতে বৈশ্বিক বার্ষিক বিনিয়োগ ১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলার। এটা ২০৩০ সালে বেড়ে দাঁড়াবে ২ ট্রিলিয়নে।
নতুন করে বিশ্বে ৭৫ মিলিয়ন গ্রাহক বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছেন। তবে দাম বৃদ্ধির কারণে তাঁরা এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। এ ছাড়া প্রায় ১০০ মিলিয়ন মানুষ ফের রান্নার জন্য কাঠের দিকে ঝুঁকছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে সংস্থাটি।
আইইএর নির্বাহী পরিচালক ফাতিহ বিরল বলেন, ভবিষ্যতে এনার্জি খাতে নিজেদের কর্তৃত্ব বজায় রাখতে দেশগুলো সবুজ জ্বালানির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে দেশগুলোর শিল্পনীতি বড় ভূমিকা রাখছে। এ ছাড়া গতকাল জাতিসংঘের পৃথক আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশগুলো বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখার প্রতিশ্রুতির ধারেকাছেও নেই। বরং প্রায় ২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির দিকে গেছে পৃথিবী। ইতোমধ্যে ১ দশমিক ২ ডিগ্রি তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত তাপমাত্রা, ঝড় ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিশ্ব। এদিকে ইউক্রেনে আগ্রাসনের ২৪৬তম দিনে রাশিয়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, যুদ্ধে স্যাটেলাইট ব্যবহার করা হলে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদের বাণিজ্যিক স্যাটেলাইটগুলো রাশিয়ার 'বৈধ টার্গেটে' পরিণত হতে পারে। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, পশ্চিমা আধিপত্য কায়েমে এসব দেশ মহাকাশকে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে।
অন্যদিকে, রাশিয়া অধিভুক্ত ক্রিমিয়ার একটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে গতকাল ড্রোন হামলা চালানোর খবর পাওয়া গেছে। সেভাস্তোপলের গভর্নর মিখাইল রাজভোজায়েভ বলেছেন, বালাক্লাভা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। তবে এটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। ট্রান্সফরমারের সামান্য ক্ষতি হয়েছে। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে পাল্টা হামলার মধ্যেই কৌশলগত খেরসন পুনরুদ্ধারে বড় ধরনের যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইউক্রেনীয় সেনারা। এ ব্যাপারে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, সামনে ভালো খবর আসছে। আবারও ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল। যুক্তরাষ্ট্র সফররত দেশটির প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ সিএনএনকে বলেন, ইউক্রেনকে সহায়তা করার বিষয়ে ইসরায়েলের সীমাবদ্ধতা রয়েছে।