বিক্ষোভের ঘটনায় ইরানে আরও একজনকে প্রকাশ্যে ফাঁসি

মাজিদ রেজা রাহনাভার্দ। ছবি- সংগৃহীত।
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২২ | ০৫:০১ | আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২২ | ০৫:০১
ইরানে চলমান বিক্ষোভের ঘটনায় আরও এক বিক্ষোভকারীর প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। ওই ব্যক্তির নাম মাজিদ রেজা রাহনাভার্দ। এ নিয়ে বিক্ষোভের ঘটনায় এক সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে দুইজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলো।
ইরানের বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মাশহাদ শহরে মাজিদ রেজা রাহনাভার্দের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। নিরাপত্তাবাহিনীর দুই সদস্যকে ছুরিকাঘাত ও হত্যার ঘটনায় তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
আজ সোমবার ইরানের বিচার বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। খবর বিবিসির।
ইরানের বিচার বিভাগের সংবাদ সংস্থা মিজানের প্রতিবেদনে বলা হয়, মাজিদকে আজ সকালে প্রকাশ্যে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে।
আধা সরকারি সংবাদ সংস্থা ফারস নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, মাজিদ স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী বাসিজের দুই সদস্যকে হত্যা এবং চারজনকে আহত করেছেন। রেভল্যুশনারি গার্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বাসিজ বাহিনী বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ইরানে চলমান ধরপাকড় অভিযানের সম্মুখসারিতে আছে।
ইরানে বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে প্রথম মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয় গত বৃহস্পতিবার। তখন মহসেন সেকারি নামের একজনকে ফাঁসি দেওয়া হয়। তাঁর বিরুদ্ধে তেহরানে এক নিরাপত্তাকর্মীকে ছুরিকাঘাত ও রাস্তা বন্ধ করে বিক্ষোভ করার অভিযোগ আনা হয়। এ ঘটনায় ইরান সরকার ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে পড়ে।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর তেহরানে নৈতিকতা রক্ষা পুলিশের কাছে আটক হন ২২ বছর বয়সী কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনি। সে সময় হিজাবের নিচ দিয়ে তার কিছু চুল দেখা যাচ্ছিল বলে অভিযোগ করা হয়। পরে তাকে একটি বন্দিশালায় নেওয়া হয়। সেখানে নির্যাতনের পর তিনি কোমায় চলে যান। তিন দিন পর হাসপাতালে মারা যান তিনি। পুলিশ কর্মকর্তারা তার মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেছে এবং তাদের একটি গাড়িতে আমিনির মাথা ঠুকে দিয়েছে বলে অভিযোগ। তবে দেশটির পুলিশ বাহিনী বলেছে, কোনো নির্যাতন করা হয়নি। মাহসার হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল।
মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর বিক্ষোভে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ইরান। তেহরান থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ ইরানের ৩১ প্রদেশের প্রায় ১৬০ শহরে ছড়িয়ে পড়েছে।
দেশটির মানবাধিকার কর্মীদের তথ্যানুসারে, চলমান বিক্ষোভে তিনশতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আটক হয়েছেন ১৪ হাজারেরও বেশি আন্দোলনকারী। ইরানে বেশ কয়েক বছর এমন অস্থিরতা দেখা যায়নি। বিক্ষোভের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিশ্বের ১৫০টির বেশি শহরে সমাবেশ হয়েছে।
এদিকে বিক্ষোভের নেপথ্যে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল জড়িত বলে মন্তব্য করেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। তিনি বলেছেন, ইরানের চরম শত্রুরা ‘দাঙ্গা’র নেপথ্যে ‘কলকাঠি নাড়ছে’। নারী অধিকারের দাবিতে চলমান এ বিক্ষোভে পবিত্র কোরআন পোড়ানো হয়েছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন তিনি। অন্যদিকে, বিক্ষোভকারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনী যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, তার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
- বিষয় :
- মাহসা আমিনি
- বিক্ষোভ
- ইরান
- ফাঁসি
- মৃত্যুদণ্ড