ঢাকা মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫

হঠাৎ কূটনৈতিক তৎপরতা জেলেনস্কির

হঠাৎ কূটনৈতিক তৎপরতা জেলেনস্কির

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ফাইল ছবি

সমকাল ডেস্ক

প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২২ | ১২:০০ | আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২২ | ২২:৩১

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে হঠাৎ কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়িয়েছেন। ১০ মাস ধরে চলা যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে রোববার তিনি যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক এবং ফ্রান্সের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।

গত ফেব্রুয়ারির শেষদিকে রুশ বাহিনী ইউক্রেনে আক্রমণ করার পর থেকে জেলেনস্কি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ এবং তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে ঘন ঘন কথা বলেছেন। কিন্তু এর আগে একদিনে এত প্রভাবশালী নেতার সঙ্গে আলোচনা করেননি।

পরে রোববার রাতে নিয়মিত ভিডিও ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, 'আমরা অব্যাহতভাবে সহযোগীদের সঙ্গে কাজ করছি।' জেলেনস্কি আরও বলেন, তিনি ইউক্রেন পরিস্থিতির ওপর গুরুত্ব আরোপ করবে এমন আন্তর্জাতিক ঘটনাগুলো থেকে আগামী সপ্তাহে কিছু 'গুরুত্বপূর্ণ ফল' আশা করছেন।

জেলেনস্কি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যে নজিরবিহীন প্রতিরক্ষা ও আর্থিক সহায়তা দিয়েছে, তার জন্য তিনি প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি ইউক্রেনের জনগণকে রক্ষা করার জন্য কার্যকর বিমানবিধ্বংসী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা নিয়েও কথা বলেন। পরে এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউস বলেছে, ইউক্রেনের বিমান প্রতিরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে বাইডেন প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।

ফ্রান্সের মাখোঁ এবং তুরস্কের এরদোয়ানের সঙ্গে জেলেনস্কির আগের আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছিল জ্বালানি সংকট। মাখোঁর সঙ্গে এক ঘণ্টারও বেশি কথোপকথনকে 'খুবই অর্থবহ' বলে উল্লেখ করে জেলেনস্কি জানান, তাঁদের মধ্যে প্রতিরক্ষা, জ্বালানি, অর্থনীতি ও কূটনীতি নিয়ে কথা হয়েছে। এ যুদ্ধ অবসানে মাখোঁ কূটনৈতিক আলোচনার ওপর জোর দিয়ে আসছেন।

রাশিয়ার অব্যাহত ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা দেশের অনেক জ্বালানি অবকাঠামোকে ধ্বংস করেছে। এতে লাখ লাখ বেসামরিক নাগরিক বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। আর এমন সময়ে এ হামলা হচ্ছে, যখন ইউক্রেনে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে নেমে এসেছে।

এদিকে ইউক্রেনীয় শিশুদের আশ্রয় দেওয়া এবং সারাদেশের শহরগুলোতে শত শত জেনারেটর মোতায়েন করায় তুরস্ককে ধন্যবাদ জানান জেলেনস্কি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট আরও বলেছেন, তিনি এবং এরদোয়ান শস্য রপ্তানি চুক্তির সম্ভাব্য সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করেছেন। রাশিয়ার অবরোধের পর গত জুলাইয়ে তুরস্কের মধ্যস্থতায় প্রথমবারের মতো ইউক্রেনের বন্দর থেকে শস্য রপ্তানি শুরু হয়। এরদোয়ানের কার্যালয় বলেছে, তুর্কি নেতা রোববার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভদ্মাদিমির পুতিনের সঙ্গেও কথা বলেছেন এবং সংঘাত দ্রুতই শেষ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

পুতিন গত সপ্তাহে একটি দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ বিষয়ে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, পশ্চিমা দেশগুলো মস্কোর আস্থা প্রায় সম্পূর্ণ শেষ করে দিয়েছে। এতে ইউক্রেন নিয়ে চূড়ান্ত মীমাংসা করা আরও কঠিন হবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে ভযাবহ এ সংঘাত নিয়ে কোনো শান্তি আলোচনা চলছে না এবং এর কোনো শেষও দেখা যাচ্ছে না। রাশিয়া ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এবং প্রাক-যুদ্ধের সীমানাকে সম্মান করার কোনো লক্ষণ দেখায়নি। মস্কো বলেছে, যে চারটি অঞ্চল গত সেপ্টেম্বরে ইউক্রেন থেকে দখল করে নিয়েছে বলে দাবি করেছে, সেগুলো চিরকালের জন্য রাশিয়ার অংশ। অন্যদিকে ইউক্রেন সরকার বলেছে, শান্তির বিনিময়ে রাশিয়াকে এক ইঞ্চি জমিও ছেড়ে দিতে তারা প্রস্তুত নয়।

এদিকে রাশিয়ার পক্ষে লড়াই করা ওয়াগনার মার্সেনারিদের একটি সদরদপ্তরে ইউক্রেনের সৈন্যরা হামলা চালিয়েছে। লুহানস্কের নির্বাসিত গভর্নর সেরহি হাইডাই বলেছেন, লুহানস্কের কাদিভকায় যে হোটেলে ওই ভাড়াটে সৈন্যরা অবস্থান করছিল, সেখানে হামলায় বহু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে হোটেলে ওয়াগনারের সৈন্যরা ছিল কিনা, তা জানা যায়নি। সূত্র :আলজাজিরা, বিবিসি, এএফপি।

আরও পড়ুন

×