ঢাকা শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

নতুন জোট ‘ইন্ডিয়ার’ প্রথম ধাক্কা

নতুন জোট ‘ইন্ডিয়ার’ প্রথম ধাক্কা

সমকাল ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৩ | ০০:১৭

মণিপুরে সহিংসতা নিয়ে ভারতজুড়ে অস্থিরতা চলছে। এর মধ্যে নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সংসদের নিম্নকক্ষে (লোকসভা) অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছে ২৬টি বিরোধী দলের নতুন জোট ‘ইন্ডিয়া’। আসাম থেকে নির্বাচিত কংগ্রেস সদস্য গৌরব গগৈ জোটের পক্ষে বুধবার এ প্রস্তাব জমা দেন। পাশাপাশি এদিন তেলেঙ্গানা রাজ্যের শাসক দল বিআরএসের পক্ষ থেকে নম নাগেশ্বর রাও পৃথক অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেন।

অনাস্থা প্রস্তাবকে ভারতের আগামী সাধারণ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন বিজেপির বিরুদ্ধে সদ্য গঠন করা জোট ‘ইন্ডিয়া’র প্রথম ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে। মোদিকে হটানোর লক্ষ্যে সম্প্রতি বেঙ্গালুরুতে দুই দিনব্যাপী বৈঠকে নতুন জোটের নাম ঘোষণা করা হয়। বৈঠকের পর কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বিরোধীদের এ জোট গঠনের পদক্ষেপকে ‘মোদি বনাম ইন্ডিয়া’ যুদ্ধ বলে অভিহিত করেন। জোটটি গঠনের পর অনাস্থা প্রস্তাব দিয়ে এই প্রথম মোদির ওপর সরাসরি চাপ সৃষ্টি করা হলো।

বিরোধী দলের নেতারা বলছেন, নতুন জোট গঠনের পর থেকে মোদির নির্ঘুম রাত কাটছে। এখন মণিপুরে সরকারের ব্যর্থতা আড়াল করার জন্য তিনি মরিয়া হয়ে দৃষ্টি সরানোর চেষ্টা করছেন। সংসদের ভেতর প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করে লাগাতার বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে বিরোধীরা। কিন্তু সরকার সেই দাবিকে কিছুতেই গুরুত্ব দিচ্ছে না। তাই মোদি যাতে মণিপুরসহ অন্য গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে কথা বলেন, সে জন্য অনাস্থা প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

তবে অনাস্থা প্রস্তাবে মোদি সরকারের জন্য কোনো সংকট তৈরি হবে না। সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিতে অন্তত ৫০ সদস্যের সই প্রয়োজন। ইন্ডিয়া জোটের সেই সংখ্যক সমর্থন থাকলেও প্রস্তাবটি পাস করানোর মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা বিরোধীদের নেই। তাই মোদি সরকারের বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাবটি আলোচনার পর ভোটাভুটিতে খারিজ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

এদিকে বিরোধীরা বলছেন, তারা হয়তো অনাস্থা প্রস্তাব পাস করাতে পারবেন না। তবে এ প্রস্তাব তাদের মণিপুর ইস্যুতে আলোচনা করতে প্রয়োজনীয় অনুপ্রেরণা জোগাবে। এটি মণিপুর ইস্যুতে মোদিকে সংসদে বক্তব্য দিতে বাধ্য করতে সহায়তা করবে। অনাস্থা প্রস্তাবের পরিকল্পনা সফলের লক্ষ্যে দলের সংসদ সদস্যদের আজ সংসদে উপস্থিত থাকার জন্য নির্দেশ জারি করেছে কংগ্রেস।

মণিপুরে সহিংসতা এবং ধর্ষণ ইস্যুতে মোদিকে জবাব দিতে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হতে পারে বলে ইঙ্গিত গত মঙ্গলবার। সেদিন বিরোধী জোটের বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়। পরদিন অনাস্থা প্রস্তাব আনা হলে বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা দাঁড়িয়ে তাতে সমর্থন জানান। এর পর প্রস্তাব অনুমোদন করে স্পিকার ওম বিড়লা বলেন, এটি বিধিসম্মতভাবে পেশ করা হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হবে। এর পর সেটি গৃহীত হলে আলোচনার দিন ঠিক করবেন তিনি। এর আগে ২০১৮ সালে মোদির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব ভোটাভুটিতে খারিজ হয়ে গিয়েছিল।

মঙ্গলবারের বৈঠকের পর বিরোধী জোটের এক জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘অনাস্থা প্রস্তাবের নোটিশ পাঠানো হলে প্রধানমন্ত্রীকে অবশ্যই কথা বলতে হবে। তিনি যদি কথা না বলেন, তাহলে বোঝা যাবে তিনি পালিয়ে যাচ্ছেন।’

মণিপুর ইস্যুতে বিরোধীরা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবে কিনা জানতে চাইলে এদিন কংগ্রেস মুখপাত্র মনীষ তিওয়ারি বলেন, সংসদীয় ব্যবস্থা এবং ঐতিহ্যে সব বিকল্প খোলা আছে।

এদিকে অনাস্থা প্রস্তাবের বিরোধীদের কিছুটা খোঁচা দিয়ে বিজেপি নেতা প্রহ্লাদ জোশি বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপি সরকারে আস্থা রয়েছে জনগণের।’ পাল্টা জবাবে তৃণমূল নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বিজেপি কী বলছে সেটা বড় কথা নয়। বড় কথা হলো, আমাদের কথাগুলো ওখানে (সংসদে) বলা যাবে।’

আরও পড়ুন

×