সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের ওরচেষ্টার এলাকার কিনার্সলিতে বেশ কয়েকটি প্রাচীন ও দুর্লভ মদের বোতল পাওয়া গেছে। দেখতে অদ্ভুত সুন্দর আর ঝকঝকে। স্বর্ণের পাতে মোড়া বোতলগুলো সপ্তদশ শতকের। প্রত্নতাত্ত্বিকদের বেশ মনোযোগ কেড়েছে এগুলো।

বোতলগুলো বর্তমানে ইংল্যান্ডের এক অভিজাত ব্যক্তির কাছে রয়েছে। ক্রোম এস্টেট নামে প্রাচীন ও রাজকীয় এক বাড়ির মাটি খুঁড়ে বোতলগুলো পাওয়া যায়।

অ্যালান ব্ল্যাকম্যান কাজ করেন নিলাম প্রতিষ্ঠান বিবিআরের সঙ্গে। তিনি মেশিন দিয়ে ওই বাড়ির মাটি খুঁড়ছিলেন। এ সময় তিনি দেখতে পান, একটি বোতল কাদা থেকে উঁকি দিচ্ছে। তখন এটি তুলে নিয়ে পানিতে ধুয়ে পরিষ্কার করেন। তখনই এর সৌন্দর্যে তিনি অভিভূত হয়ে পড়েন। সেখান থেকে আরও ছয়টি বোতল পাওয়া যায়।

প্রত্নতাত্ত্বিকরা মনে করছেন, কালো কাচের তৈরি বোতলগুলো আনুমানিক ১৬৬৫ থেকে ১৬৭০ সালের। প্রতিটি বোতলের উচ্চতা প্রায় ৮ ইঞ্চি। কয়েকশ' বছর ধরে মাটির নিচে থাকা বোতলগুলো এখনও ঝকঝকে। সপ্তদশ শতাব্দীর ওই সময়ের বোতলের সন্ধান খুব একটা পাওয়া যায় না। তাই প্রত্নসংগ্রাহকদের কাছেও এর কদর অনেক বেশি।

বোতলের গায়ে যে সিলমোহর খোদিত রয়েছে, তা ইতিহাসবিশারদদের কাছে খুবই পরিচিত। দুটি বোতলের কাঁধের কাছেই কভেনট্রি কোট অব আর্মসের সিল রয়েছে, যা দেখে প্রত্নতাত্ত্বিকরা অনুমান করছেন, জর্জ থার্ড ব্যারন অব কভেনট্রির মালিকানায় ছিল বোতলগুলো। তিনি ১৬২৮ থেকে ১৬৮০ সাল পর্যন্ত বেঁচেছিলেন। 

তবে অনেকে মনে করছেন, ব্যারনের পিতা ডিউক অব বাকিংহাম নামে পরিচিত ইংল্যান্ডের ইতিহাসে কুখ্যাত সেই জর্জ ভিলিয়ার্সের কারখানায় তৈরি বোতলের সঙ্গেই এসবের মিল বেশি। তিনি ছিলেন সেকেন্ড আর্ল অব কভেনট্রি খেতাবের অধিকারী এক প্রতাপশালী জমিদার। রাজা প্রথম জেমসের প্রিয়পাত্র। 

ইংল্যান্ডে গৃহযুদ্ধের সময় জর্জ ভিলিয়ার্স রয়ালিস্টদের পক্ষে লড়াই করেছিলেন। তবে লড়াইয়ে প্রতিপক্ষ পার্লামেন্টারিয়ানদের জয় হলে তিনি পালিয়ে যান। ১৬৬০-এর দশকে রাজা দ্বিতীয় চার্লস পুরোনো খেতাব ও ক্ষমতা ফিরিয়ে দেন জর্জ ভিলিয়ার্সকে। এরপর তিনি কাচশিল্পের ব্যবসায় নামেন। প্রত্নতাত্ত্বিকদের অনুমান, এসব বোতল তার কারখানাতেই তৈরি হয়েছিল। সূত্র : এনসিয়েন্টঅরিজিনসডটনেট।