বিলীন হবে বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন শিল্পকর্মটি? ইন্দোনেশিয়ার দক্ষিণ সুলাওয়েসি দ্বীপের একটি গুহায় পাওয়া শিকারের ৪৪ হাজার বছর আগের ছবিটি নিয়ে এমন প্রশ্নই তুলছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। কারণ, একটি সিমেন্ট কোম্পানি নিয়ন্ত্রিত এলাকার মাঝখানে ওই গুহাটির অবস্থান। গুহা সুরক্ষায় প্রতিষ্ঠানটি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হলেও এর পাশঘেঁষে খনন কাজ অব্যাহত রেখেছে। 

এলাকাটি প্রত্নতত্ত্বভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখানে আরও অনেক মূল্যবান প্রত্নসম্পদের দেখা মিলতে পারে বলে মনে করছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। তারা এখন চেষ্টা করছেন, কীভাবে গুহা এলাকাটিকে আরও সুরক্ষিত রাখা যায়।

ইন্দোনেশিয়ার একজন প্রত্নতাত্ত্বিক বলেন, গুহাটির সুরক্ষা নিয়ে তারা খুবই উদ্বিগ্ন। সিমেন্ট কোম্পানিটি গুহার চারপাশ ঘেঁষে মার্বেল পাথরের জন্য খননকাজ অব্যাহত রেখেছে। ২০১৭ সালে গুহাচিত্রটি আবিষ্কৃত হওয়ার পরপরই টোনাসা সিমেন্ট কোম্পানি বুলো সিপাং গুহার চারপাশ ঘিরে ৩ দশমিক ৬ হেক্টর জায়গা সংরক্ষণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়। 

তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে, আশপাশের এলাকার কোম্পানি যেভাবে ড্রিল মেশিনে খনন চালিয়ে যাচ্ছে তাতে গুহাটির দেয়াল যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে।

ওই গুহায় আঁকা ছবিটি ৪৪ হাজার বছর আগের। এতে রয়েছে মানুষের হাতে শিকার হওয়া একটি মহিষের চিত্র। ২০১৭ সালে এটির সন্ধান পাওয়ার পর গবেষকরা বলেছিলেন, এটিই এখন পর্যন্ত পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে পুরোনো প্রাণীর ছবি। সে সময় অস্ট্রেলিয়ার গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিষয়ক জার্নালে এই আবিষ্কারের খবর প্রকাশিত হয়।

চুনাপাথরের গায়ে আঁকা ওই চিত্রকর্মটি প্রায় ৫ মিটার চওড়া। এ নিয়ে গবেষণায় যুক্ত ছিলেন প্রত্নতাত্ত্বিক ব্রুম। তিনি সে সময় বলেন, এই অঞ্চলে আমরা শত শত প্রাচীন গুহাচিত্র দেখেছি। কিন্তু এই প্রথম শিকারের মুহূর্তের একটি ছবি দেখতে পেলাম।

তবে এক বছর পরই এটি প্রাণীর ছবি নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো গুহাচিত্রের গৌরব হারায়। ২০১৮ সালে এই গবেষকরাই দক্ষিণ আফ্রিকাতে আরেকটি গুহাচিত্র খুঁজে পান, যা ৭৩ হাজার বছর আগের।