প্রতি মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ছে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যু আর আক্রান্তের সংখ্যা। কবে এই ভাইরাস থেকে মুক্তি মিলবে; বিশ্বব্যাপী মানুষ এখন সেদিকেই তাকিয়ে আছে। আশার কথা শোনার অপেক্ষায় তারা। কবে আসছে করোনার প্রতিষেধক?

প্রাণঘাতি এই ভাইরাসের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে ঠিক কতটা এগিয়েছেন বিজ্ঞানীরা, এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো প্রতিষেধক বা ওষুধ ব্যবহার করে কবে থামানো যাবে এর সংক্রমণে হওয়া মৃত্যু। ইতিবাচক ব্যাপার হলো ওষুধ ও টীকা আবিষ্কারের চেষ্টায় কোনও কোনও প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে এগিয়েছে কয়েক ধাপ।

সংবাদমাধ্যম স্ট্যাটনিউজ এরকম কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের উল্লেখযোগ অগ্রগতি নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

গিলিয়েড সায়েন্সেস

ধরণ : চিকিৎসা

পর্যায় : তৃতীয়

যুক্তরাষ্ট্রের জৈবপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গিলিয়েড সায়েন্সেস করোনার ওষুধ আবিষ্কারের পথে তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছে। বিশ্বের পাঁচটি হাসপাতালে এরই মধ্যে পরীক্ষা চালাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। চীনে সংক্রমিত এক হাজার জনের ওপর গবেষণা চালাচ্ছে তারা। রোগীদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং দুই সপ্তাহের মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়াই গিলিয়েড সায়েন্সেসের প্রাথমিক লক্ষ্য।

অ্যাসক্লেটিস ফার্মা

ধরণ : চিকিৎসা

পর্যায় : প্রথম

করোনার প্রতিষেধক আবিষ্কারের প্রথম পর্যায়ে রয়েছে এইডস ও হেপাটাইটিস সি নিয়ন্ত্রণে সাফল্য পাওয়া চীনের প্রতিষ্ঠান অ্যাসক্লেটিস ফার্মা। গত মাসে ১১ রোগীকে সেবা দিয়ে দিয়েছে তারা; যাদের মধ্যে কয়েকজন এরই মধ্যে হাসপাতাল ছেড়েছেন। তবে গবেষণার কৌশল ও এর বিস্তারিত কিছু জানায়নি তারা।

মডার্না থেরাপিউটিক্স

ধরণ : টিকা

পর্যায় : প্রথম

যুক্তরাষ্ট্রের মডার্না থেরাপিউটিক্স করোনা রোধে টিকা আবিষ্কারের প্রথম পর্যায়ে রয়েছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের সঙ্গে যৌথভাবে কার্যক্রম শুরু করে তারা। কয়েক শ' মানুষের ওপর প্রাথমিকভাবে টিকা প্রয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানের।

ক্যানসিনো বায়োলজিক্স

ধরণ : টিকা

পর্যায় : প্রথম

ক্যানসিনো বায়োলজিক্স চীনের একটি প্রতিষ্ঠান। করোনার টিকা আবিষ্কারের প্রথম পর্যায়ে রয়েছে তারা। কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেলেই পরীক্ষা চালানো শুরু হবে শিগগিরই। ইবোলা ভাইরাসের টিকা আবিষ্কারে সাফল্য দেখিয়েছে এই প্রতিষ্ঠান।

আর্কটরাস থেরাপিউটিক্স

ধরণ : টিকা

পর্যায় : প্রিক্লিনিক্যাল

ক্যালিফোর্নিয়ার প্রতিষ্ঠান আর্কটরাস থেরাপিউটিক্স করোনার টিকা আবিষ্কারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব মানুষের ওপর এই টিকার পরীক্ষা রয়েছে তাদের। এছাড়া বিয়োনটেক, কিউরভেকও টিকা আবিষ্কারের পথে এগুচ্ছে।

ইলি লিলি

ধরণ : চিকিৎসা

পর্যায় : প্রিক্লিনিক্যাল

করোনার রোধে আমেরিকার প্রতিষ্ঠান ইলি লিলি ওষুধ আবিষ্কারের চেষ্টা করছে। এরই মধ্যে আক্রান্তের শরীর থেকে রক্ত সংগ্রহ করে পরীক্ষাও শুরু করেছে তারা। আগামী চার মাসের মধ্যে মানুষের শরীরে এই ওষুধ প্রয়োগের চিন্তা রয়েছে তাদের।

গ্লাক্সোস্মিথক্লাইন

ধরণ : টিকা

পর্যায় : প্রিক্লিনিক্যাল

বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকা নির্মাতা এই প্রতিষ্ঠান চীনের একটি প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের প্রযুক্তি ব্যবহার করতে দিয়েছে করোনাভাইরাসের টিকা আবিস্কারের জন্য।

ইনোভিও ফার্মাসিটিকেলস

ধরণ : টিকা

পর্যায় : প্রিক্লিনিক্যাল

প্রতিষ্ঠানটি গত ৪০ বছর ধরে ডিএনএকে ওষুধে রূপান্তরিত করার বিষয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। এখন তারা করোনাভাইরাস নিয়েও কাজ শুরু করেছে।

জনসন অ্যান্ড জনসন

ধরণ : টিকা ও চিকিৎসা

পর্যায় : প্রিক্লিনিক্যাল

ইবোলা ও জিকা ভাইরাসের সংক্রমণের সময়ও কোম্পানিটি গবেষণায় নেমেছিল। এখন একই পথ ধরে করোনাভাইরাসের টিকা ও ওষুধ আবিস্কারের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

ফাইজার

ধরণ : টিকা ও চিকিৎসা

পর্যায় : প্রিক্লিনিক্যাল

নিউইয়র্কের প্রতিষ্ঠান ফাইজার চেষ্টা করছে ওষুধ এবং টিকা আবিষ্কারের।

রিজিনিরন ফার্মাসিউটিকেলস

ধরণ : চিকিৎসা

পর্যায় : প্রিক্লিনিক্যাল

জেনেটিক্যালি ইনজিনিয়ারড ইঁদুর থেকে মানুষের শরীরের উপযোগী এন্টিবডি তৈরির জন্য বিখ্যাত এ প্রতিষ্ঠান এখন একই পদ্ধতিতে করোনাভাইরাসের ওষুধ আবিষ্কারের চেষ্টা করছে।

স্যানোফি

ধরণ : টিকা ও চিকিৎসা

পর্যায় : প্রিক্লিনিক্যাল

স্যানোফি করোনাভাইরাসের ডিএনএ নিয়ে গবেষণা করছে। চেষ্টা করছে ওষুধ ও করোনার টিকা আবিষ্কারের।

তাকেদা

ধরণ : চিকিৎসা

পর্যায় : প্রিক্লিনিক্যাল

করোনাভাইরাসে আকান্ত হয়েছেন এমন মানুুষের রক্ত নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে জাপানের বৃহৎ ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান তাকেদা। রোগীর চিকিৎসায় তাদের ওষুধ আসতে ১২ থেকে ১৮ মাস সময় লাগবে।

ভির বায়োটেকনলজি

ধরণ : চিকিৎসা

পর্যায় : প্রিক্লিনিক্যাল

ভির বায়োটেকনলজি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ওষুধ আবিষ্কার করে এই ভাইরাস থেকে বিশ্বকে মুক্তি দিতে।