করোনভাইরাসের মহামারির এই সংকটের মধ্যেই চীনে বর্ণবাদী আচরণের শিকার হচ্ছেন দেশটিতে অবস্থান করা আফ্রিকানরা। বিষয়টি নিয়ে কূটনৈতিক চাপে পড়েছে বেইজিং। সিএনএন আনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফ্রিকার কয়েকটি দেশ বর্ণবাদের বিষয়ে বেইজিংয়ের কাছে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

চীনের গুয়াংজুতে আফ্রিকানদের বসবাস সবচেয়ে বেশি। সেখানে নাইজেরিয়ার নাগরিকদের অভিযোগ, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের জন্য তাদেরই বেশি সন্দেহ করা হচ্ছে। তাদেরও কোয়ারেন্টাইনে যেতেও বাধ্য করা হচ্ছে।

চীনে বসবাসরত কেনিয়া, ঘানা, উগান্ডাসহ আফ্রিকার আরও কিছু দেশের নাগরিকেরা একই অভিযোগ করেছেন। চীনে রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের এমন ‘বাড়াবাড়ি’ স্থানীয়দের মধ্যেও বর্ণবাদী সন্দেহ বাড়িয়ে দিয়েছে।

গুয়াংজুতে অনেক আফ্রিকানকে বের করে দিয়েছেন বাড়ির মালিকেরা। তারা বাধ্য হয়ে দিন-রাত কাটাচ্ছেন রাস্তায়। হোটেলেও তাদের জায়গা দেওয়া হচ্ছে না।

আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের সরকারের পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমগুলোও এসব নিয়ে বেশ চটেছে। কেনিয়ার একটি দৈনিক শিরোনাম করেছে, ‘চীনে থাকা কেনিয়ার নাগরিকদের আর্জি : দোজখ থেকে আমাদের মুক্ত করুন।’

উগান্ডা, দক্ষিণ আফ্রিকা ও নাইজেরিয়ার সংবাদমাধ্যমগুলোতেও একইরকম সংবাদ পরিবেশিত হতে দেখা গেছে।

এসব ঘটনায় কিছুটা বিপাকে পড়েছে বেইজিং। কারণ আফ্রিকার বেশ কিছু জায়গায় বিপুল অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করেছে দেশটি। আফ্রিকার সঙ্গে চীনের বাণিজ্যিক সম্পর্কও দৃঢ় হচ্ছে দিনদিন। এমন পরিস্থিতিতে আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে টানাপোড়েন বেইজিংকে বেশ অস্বস্তিতে ফেলেছে।

নাইজেরিয়া, ঘানা, উগান্ডার মতো দেশ প্রতিবাদলিপির পাশাপাশি বেইজিংয়ের প্রতি বর্ণবাদী আচরণের বিষয়ে সতর্কবার্তা পাঠিয়েছে।

প্রতিক্রিয়ায় চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান রোববার বলেছেন, করোনাভাইরাসের সংকট মোকাবিলার কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে আফ্রিকার দেশগুলোর উদ্বেগকে যথেষ্ঠ গুরুত্ব দেবে বেইজিং।

জিম্বাবুয়েতে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত টুইটারে লিখেছেন, চীনে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখানো হয়।

চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমস এক সম্পাদকীয়তে লিখেছে, পুরো বিষয়টিকে বর্ণবাদী ঘটনা বলে সামনে এনেছে পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমগুলো। এসব সংবাদমাধ্যম চীন ও আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক নষ্ট করতে উঠে পড়ে লেগেছে।