- আন্তর্জাতিক
- চীন থেকে কিট কিনে দামে ও মানে ক্ষতিতে ভারত!
চীন থেকে কিট কিনে দামে ও মানে ক্ষতিতে ভারত!

ছবি: এএফপি
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি এখনও। তবুও রোগী শনাক্তের মাধ্যমে কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে পারলে করোনা সংক্রমণের হার কমছে। আর রোগীর নমুনা পরীক্ষা করে করোনা শনাক্তের জন্য সবচেয়ে বেশি জরুরি টেস্টিং কিটের। কয়েক প্রকারের টেস্টিং কিটের মধ্যে চীন থেকে আমদানি করা র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট কিট অন্যতম। কিন্তু এই কিট নিয়ে বিতর্কের যেন শেষ নেই। নিম্মমানের সঙ্গে দ্বিগুণেরও বেশি দামে ভারত সরকারকে এই কিট বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।
নিম্নমানের অভিযোগ আসায় ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) ইতিমধ্যেই ওই টেস্ট কিটের ব্যবহার স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছিল ভারতের সব রাজ্যকে। এ দিন সংশোধিত নির্দেশিকায় তা ব্যবহারে পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা জারি করে আইসিএমআর। তবে নতুন করে অভিযোগ, কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য চীন থেকে আমদানি করা র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট কিটের জন্য দ্বিগুণেরও বেশি টাকা খরচ করতে হচ্ছে ভারত সরকারকে।
আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কোভিড-১৯ সংক্রমণের পরীক্ষার জন্য গত ২৭ মার্চ চিনের কিট প্রস্তুতকারী সংস্থা গুয়াংঝৌ ওন্ডফো বায়োটেক এবং ঝুহাই লিভজোন ডায়াগনস্টিকস থেকে সাড়ে ৫ লাখ র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট কিটের বরাদ্দ দেয় ভারত সরকার। আইসিএমআর-এর মাধ্যমে সেই বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল রিয়েল মেটাবলিকস নামে চিনা সংস্থাকে। এ নিয়ে আইসিএমআর-এর সঙ্গে চুক্তি হয় ভারতের এক সরবরাহকারী সংস্থা আর্চ ফার্মাসিউটিক্যালসের সঙ্গে। গত ১৬ এপ্রিল তা ভারতকে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।
চীন থেকে কিট প্রতি ২৪৫ রুপি দিয়ে ভারতে তা আনে মেট্রিক্স নামে এক আমদানিকারক সংস্থা। তবে প্রতি কিটের ক্রয়মূল্য ২৪৫ রুপি হলেও কেন্দ্রীয় সরকারকে তার প্রতিটি ৬০০ রুপি দিয়ে বিক্রি করে রিয়েল মেটাবলিকস এবং আর্ক ফার্মাসিউটিক্যালস।
এসব ঘটনায় ঝামেলা শুরু হয় যখন কেরালা সরকার শান বায়োটেক নামে অন্য এক সরবরাহকারীর মাধ্যমে ওই কিট প্রতি ৬০০ রুপিতে মেট্রিক্স-এর কাছ থেকে কেনে। এর পরই আদালতের দ্বারস্থ হয় রিয়েল মেটাবলিকস। রিয়েল-এর দাবি, ভারতে ওই কিট বিক্রি স্বত্ব কেবল তাদের কাছেই রয়েছে। ফলে শান বায়োটেক-এর মাধ্যমে তা কেরলকে বিক্রি করায় সেই চুক্তি ভঙ্গ করেছে মেট্রিক্স। মামলা গড়ায় দিল্লি আদালতে।
ওই মামলায় শুনানির পর ভারতের আদালত জানিয়েছে, প্রতিটি র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট কিট বিক্রি ৪০০ রুপির বেশি দামে কোনও ভাবেই বিক্রি করা যাবে না। জিএসটি এবং অন্যান্য খরচাপাতি মিলিয়ে ওই দাম ধার্য করেছে আদালত। সেই সঙ্গে আদালতের মন্তব্য, ‘গত এক মাস ধরে অর্থনীতির চাকা থমকে গিয়েছে। তা সত্ত্বেও যারা মানুষের স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত তাদের আর অনেক কিট ও টেস্ট গোটা দেশে সর্বনিম্ন দামে দিতে হবে, যাতে মানুষকে এই আশ্বাস দেওয়া যায় যে, এই অতিমারি যে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এবং সরকারকে তা নজরে রাখতে হবে। এই সময় ব্যক্তিগত স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে জনস্বার্থের দিকে খেয়াল রাখতে হবে।’
এ দিকে দাম বেশি নিয়ে বিতর্কের মাঝে অবশ্য এই টেস্ট কিটের ব্যবহার বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে আইসিএমআর। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ওই কিট সরবরাহের পর তার মান নিয়েই প্রশ্ন তোলে ভারতের রাজ্য সরকারগুলি। রাজস্থানের দাবি, মাত্র ৫.৪ শতাংশ কিট কার্যকরী ছিল। যদিও এ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে আইসিএমআর।
মন্তব্য করুন