করোনাভাইরাস নিয়ে আবারও হুঁশিয়ারি দিলেন ট্রাম্প প্রশাসনের রোষানলে পড়ে চাকরিচ্যুত চিকিৎসাবিজ্ঞানী রিক ব্রাইট। বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট কংগ্রেসের শুনানিতে ব্রাইট বলেছেন, করোনার কারণে দেশ ‘ভয়াবহতম শীতকালে’র মুখোমুখি হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। খবর বিবিসি ও সিএনএনের। 

যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যাকসিন তৈরি বিষয়ক সরকারি সংস্থা বায়োমেডিকেল অ্যাডভান্সড রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অথরিটির পরিচালক ছিলেন রিক ব্রাইট। গত মাসে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিয়ে সরকারের অবহেলার প্রতিবাদ করায় এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের তথাকথিত ‘করোনার জীবাণুনাশক ওষুধের’ বিরোধিতা করায় তাকে ওই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তিনি করোনাভাইরাসের ওষুধ হিসেবে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের ব্যবহার নিয়েও ট্রাম্প প্রশাসনের বিরোধিতা করেছেন। পরে ট্রাম্প তাকে ‘অসন্তুষ্ট’ কর্মকর্তা আখ্যা দিয়ে বরখাস্ত করেন। 

বৃৃহস্পতিবার পার্লামেন্টের নিন্মকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের স্বাস্থ্য বিষয়ক উপকমিটির শুনানিতে রিক ব্রাইট বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাবের প্রথমদিকে সরকার নিষ্ক্রিয় থাকার কারণে যুক্তরাষ্ট্র অনেক প্রাণহানির শিকার হয়েছে।

রিক আরও বলেন, তিনি জানুয়ারিতেই করোনা বিস্তার ঠেকাতে মাস্কসহ মেডিকেল সরঞ্জামের স্বল্পতার কথা জানিয়েছিলেন। বিষয়টি তিনি সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে তুলেছিলেন। কিন্তু তাতে কোনো সাড়া পাননি। উল্টো আমাকে হতাশ হতে হয়েছে। 

লকডাউন শিথিলের প্রতি ইঙ্গিত করে এই ভ্যাকসিন বিশেষজ্ঞ শুনানিতে আরও বলেন, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ‘সুযোগের দরজা’ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। 

ব্রিক বলেন, আমরা যদি এখনও করোনা বিস্তার রোধে উপযুক্ত সাড়া দিতে ব্যর্থ হই, তবে আমার আশংকা, মহামারি আরও প্রকট আকার ধারণ করবে এবং দীর্ঘায়িত হবে। সঠিক পরিকল্পনা না নেওয়া হলে এই ২০২০ সালে এলে আধুনিক ইতিহাসে সবচেয়ে ‘অন্ধকারতম শীতকাল’ দেখতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে। 

উল্লেখ্য, করোনায় বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে করোনা মহামারীতে এ পর্যন্ত ৮৫ হাজার ৮০৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এরমধ্যে কেবল নিউইয়র্কেই মারা গেছেন ২৭ হাজারের বেশি মানুষ। পুরো দেশে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ১৪ লাখ। সারাবিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৩ লাখ আর প্রাণহানি ঘটেছে ৩ লাখের বেশি মানুষের।