- আন্তর্জাতিক
- খাসোগির হত্যাকারীদের ‘ক্ষমা’ করলেন ছেলেরা
খাসোগির হত্যাকারীদের ‘ক্ষমা’ করলেন ছেলেরা

নিহত সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি
সৌদি আরবের সাংবাদিক জামাল খাসোগির ছেলেরা তাদের বাবার হত্যাকারীদের ‘ক্ষমা’ করে দিয়েছেন বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন। বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার পরিবারের পক্ষ থেকে টুইটারে এ বিবৃতি দেন খাসোগির ছেলেদের একজন সালাহ খাসোগি।
সালাহ টুইটারে লিখেছেন, "পবিত্র রমজানের মহিমান্বিত রাতে আমরা আল্লাহর একটি কথা স্মরণ করছি। আল্লাহ বলেছেন, ‘যদি কোনো ব্যক্তি ক্ষমা করে দেয়, তাহলে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাকে পুরস্কৃত করা হবে।’ সুতরাং আমরা শহীদ জামাল খাসোগির ছেলেরা ঘোষণা করছি- যারা আমাদের বাবার হত্যাকারী আমরা তাদের ক্ষমা ও মার্জনা করছি।"
ইসলামী আইন অনুযায়ী, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা পরিবারের সদস্যরা ক্ষমা করে দিলে অপরাধীর সাজা মওকুফ বা কম হতে পারে। তবে খাসোগি হত্যাকাণ্ডে শাস্তিপ্রাপ্তদের সাজার ক্ষেত্রে সালাহর ঘোষণা কোনো ধরনের প্রভাব ফেলবে কিনা তা এখনও নিশ্চিত নয়।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি কর্তৃপক্ষ এখনও এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে সালাহর এ ধরনের মন্তব্যের পেছনে রাজপরিবারের সঙ্গে অর্থ লেনদেনের ব্যাপার থাকতে বলে কানাঘুষা রয়েছে। যদিও সালাহ তা অস্বীকার করেছেন। রাজপরিবারের প্রত্যক্ষ সহায়তায় সালাহ সৌদিতেই বসবাস করছেন।
জামাল খাসোগি এক সময় সৌদি রাজপরিবারের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন। তবে এক পর্যায়ে অবস্থান পাল্টে তিনি রাজপরিবারের কঠোর সমালোচকে পরিণত হন। যুক্তরাষ্ট্রের দ্য ওয়াশিংটন পোস্টে তিনি সৌদি রাজপরিবারের নানা কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে কলাম লিখতেন। ২০১৮ সালের অক্টোবরে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে খাসোগিকে হত্যার পর তার লাশ গুম করে দেওয়া হয়।
সৌদি রাজপরিবারের, বিশেষ করে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রত্যক্ষ মদদে খাসোগিকে ইস্তাম্বুলে হত্যা করার অভিযোগ ওঠে। সৌদি এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে। কিন্তু জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো সৌদির এ দাবিতে সন্তুষ্ট ছিল না।
পরে সৌদি আরব জানায়, সরকারি একটি বাহিনীকে ইস্তাম্বুলে পাঠানো হয়েছিল খাসোগিকে দেশে ফিরিয়ে আনতে। কিন্তু সেই ‘অভিযানটি বিশৃঙ্খল’ হয়ে পড়ায় খাসোগি খুন হয়ে যান।
এরপর সৌদি ১১ জনকে খাসোগি হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত করে। রিয়াদে একটি গোপন বিচারালয়ে তাদের মধ্যে পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড, তিন জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
সালাহ এর আগে বলেছিলেন, সৌদি কর্তৃপক্ষের তদন্ত ও বিচারে তার পূর্ণ আস্থা আছে। এ ছাড়া বাবার হত্যাকাণ্ডের সমালোচনাকারীদের সৌদি আরবের ‘শত্রু’ বলেও উল্লেখ করেছিলেন তিনি।
তবে জাতিসংঘ রিয়াদের গোপন বিচারালয়ে খাসোগি হত্যাকাণ্ডের বিচারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। শিগগির এ হত্যাকাণ্ডের স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।
মন্তব্য করুন