যুক্তরাষ্ট্রে জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুতে ছড়িয়ে পড়া বর্ণবৈষম্যবিরোধী বিক্ষোভের ঝড়ে এবার উড়ে গেল আমেরিকার আবিষ্কারকখ্যাত ক্রিস্টোফার কলম্বাসের 'মাথা'। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের বোস্টন শহরে মঙ্গলবার রাতে কলম্বাসের একটি ভাস্কর্যের মাথা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। বুধবার সকালে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ঘটনাস্থলটিকে ‘ক্রাইম সিন’ হিসেবে চিহ্নিত করে রাখে। এর আগে ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যে কলম্বাসের একটি ভাস্কর্যে আগুন দেয় বিক্ষোভকারীরা। খবর এএফপি ও সিএনএনের। 

ইতালির নাবিক ক্রিস্টোফার কলম্বাস ১৪৯২ সালের ১২ অক্টোবর আমেরিকা আবিষ্কার করেন। স্পেনের তৎকালীন রানির অর্থানুকূল্যে এ ভূখণ্ডে অবতরণ করেন তিনি। তবে আমেরিকার আবিষ্কারক হিসেবে কলম্বাসের ভাবমূর্তি যুক্তরাষ্ট্রে ক্রমেই ম্রিয়মান হয়ে পড়েছে। সমালোচকদের অনেকেই তাকে আমেরিকায় ইউরোপীয় উপনিবেশবাদের হোতা এবং আদিবাসীদের ওপর গণহত্যার অগ্রদূত হিসেবে আখ্যায়িত করেন। মিনিয়েপোলিসে জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের জেরে যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হওয়া বর্ণবাদ বিরোধী বিক্ষোভের সময়ে কলম্বাসবিরোধী মনোভাব আরও জোরালো হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভের মধ্যে মঙ্গলবার রাতে বোস্টন শহরের আটলান্টিক এভিনিউয়ের ক্রিস্টোফার কলম্বাস পার্কে অবস্থিত কলম্বাসের ভাস্কর্যটির মাথা গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কে বা কারা ভাস্কর্যের মাথা ভেঙে দিয়েছে, তা জানা না গেলেও স্পষ্ট যে এটি বিক্ষোভকারীদেরই কাজ। 

এ ঘটনায় পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। বোস্টনের মেয়র মার্টি ওয়ালস বলেন, আমি এ অপরাধের নিন্দা জানাই। তবে মাথাহীন ভাস্কর্যটি পার্ক থেকে তুলে ফেলা হবে। এ নিয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 

বোস্টন শহরে আক্রান্ত হওয়া কলম্বাসের ভাস্কর্যটি এর আগেও আক্রান্ত হয়েছে। ২০০৬ সালেও একবার ভাস্কর্যটির মাথা ভেঙে ফেলা হয়। ২০১৫ সালের জুন মাসে ভাস্কর্যটির গোড়ায় লিখে দেওয়া হয় 'ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার'।

এদিকে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাতে ভার্জিনিয়ার রিচমন্ড এলাকায় থাকা কলম্বাসের ভাস্কর্যটিও ভাংচুরের শিকার হয়েছে। শহরের বায়ার্ড পার্ক এলাকায় বিক্ষোভের পর কিছু বিক্ষোভকারী ভাস্কর্যটি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের পর তা লেকের পানিতে ফেলে দেয়। 

এ ব্যাপারে অ্যাক্টিভিস্ট চেলসি হিগস-ওয়াইজ বলেন, ‘যেখানে বর্ণবাদের সূচনা হয়েছে, সেখানেই আমাদের শুরু করতে হবে।'