- আন্তর্জাতিক
- ইরানে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ
ইরানে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ

ফাইল ছবি
করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ লেগেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানে। এপ্রিলের মাঝামাঝি লকডাউন শিথিলের পর থেকেই নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এর আগে গত ৩০ মার্চ প্রথম দফা সংক্রমণের শীর্ষচূড়ায় উঠে ক্রমেই কমে আসছিল আক্রান্তের সংখ্যা। বিশ্লেষকরা বলছেন, লকডাউন শিথিল, মাস্ক পরায় অনীহা ও শারীরিক দূরত্ব বজায়ে কিছুটা অবহেলার কারণেই নতুন সংক্রমণের ধাক্কা লেগেছে। যদিও ইরানি প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির দাবি, দেশে করোনার পরীক্ষা বাড়ানো হয়েছে, তাই বেশি শনাক্ত হচ্ছে। খবর বিবিসি ও সিনহুয়ার।
চীনের উহান থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর প্রথম দিকের সংক্রমিত দেশের অন্যতম ইরান। বৃহস্পতিবার দেশটির প্রকাশিত পরিসংখ্যান মতে, বুধবার পর্যন্ত দেশটিতে ১ লাখ ৭৭ হাজার ৯৩৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এরমধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ৪০ হাজার ৫৯০ জন। আর মারা গেছেন ৮ হাজার ৫০৬ জন। এখনও করোনা রোগী রয়েছেন প্রায় ৩০ হাজার।
ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বুধবার ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ১১ জন আক্রান্ত এবং ৮১ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আগের দিন আক্রান্ত ছিল ২ হাজার ৯৫ জন এবং মারা গেছে ৭৪ জন।
ইরানে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় গত ফেব্রুয়ারিতে। এরপর সংক্রমণ বাড়তে বাড়তে গত ৩০ মার্চ সর্বোচ্চ পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছায়। সেদিন ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছিল ৩ হাজার ১৮৬ জন। এরপর থেকে দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা কমছিল। সংক্রমণ কমে আসায় কর্তৃপক্ষ এপ্রিলের মাঝামাঝি লকডাউন শিথিলের ঘোষণা দিয়েছিল। তাতে ফল হয় উল্টো, ২ মের পর থেকেই আবার সংক্রমণ বাড়তে থাকে। জুনের শুরুতে এসে সেই সংক্রমণের মাত্রা আবার ৩০ মার্চের কাছাকাছি চলে এসেছে। জুনের প্রথম সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে ৩ হাজার জন আক্রান্ত হয়েছে। এরমধ্যে ৪ জুন সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৫৯৬ জন আক্রান্ত হয়েছে। এ পরিস্থিতিকে দ্বিতীয় ধাক্কা হিসেবে বিবেচনা করেই দেশের ৩১টি প্রদেশের মধ্যে ৯টিকে ‘রেড জোন’ শনাক্ত করে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রধান মহামারি বিশেষজ্ঞ ডা. মোহাম্মদ মেহদি গোয়া বলেন, সংক্রমণের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ হচ্ছে, পরীক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধি ও শনাক্ত। আমরা এখন যারা সংক্রমণের শিকার, তবে কোনো উপসর্গ নেই, তাদেরও শনাক্ত করছি। এখন প্রতিদিন গড়ে ৭৯ জনের একজনকে পরীক্ষা করা হচ্ছে। দুই মাস আগেও প্রতি ৩৮০ জনে একজনের পরীক্ষা হতো।
এদিকে সংক্রমণ বৃদ্ধির নেপথ্যে কিছুটা সামাজিক দূরত্ব বজায় নিয়ে অবহেলাকেও দায়ী করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সায়েদ নামাকি। তিনি বলেন, মানুষ শারীরিক দূরত্ব বিধি মানছে না। এ রোগটি সম্পর্কে মানুষ যেন উদাসীন হয়ে পড়েছে। তিনি আরও বলেন, মানুষ যদি স্বাস্থ্যপ্রটোকল না মেনে চলে, তবে আমাদের আরও খারাপ পরিস্থিতি দেখতে হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের এক জরিপে দেখা গেছে, বর্তমানে মাত্র ৪০ শতাংশ মানুষ সামাজিক দূরত্ব মেনে চলেন। করোনা সংক্রমণের প্রথম দিকে এ সংখ্যা ছিল ৯০ শতাংশ।
মন্তব্য করুন