ভারতের পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরেই করোনা মহামারি ও লকডাউন বিভিন্নভাবে প্রভাব ফেলেছে। এর মধ্যে ১০ শতাংশের বেশি মানুষের ওপর এই প্রভাব গুরুতর। এছাড়া এক কোটিরও বেশি মানুষের মধ্যে ‘পোস্ট ট্রম্যাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডার’ এর (পিটিএসডি) এর আশঙ্কা রয়েছে। করোনা সংক্রমণ ও লকডাউন এই দুয়ের প্রভাবে তাদের মানসিক স্থিতি নড়বড়ে হয় গেছে বলে একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে।

ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্টস-এর (আইএসিপি) ‘ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট টাস্ক ফোর্স’এর সদস্য তথা মানসিক চিকিৎসা কেন্দ্র ‘ইনস্টিটিউট অব সায়কায়াট্রি’র ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট প্রশান্তকুমার রায়ের উদ্যোগে একটি সমীক্ষায় এই তথ্য উঠে এসেছে।

জনমনে করোনা সংক্রমণ ও লকডাউনের প্রভাব জানতে সমাজের বিভিন্ন আর্থিক স্তর ও নানা পেশার সঙ্গে যুক্ত প্রায় এক হাজার মানুষের ওপর এই সমীক্ষা চালানো হয়। পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা শহরতলী থেকে শুরু করে গ্রামীণ এলাকার ১৮-৮০ বছর বয়সীদের সমীক্ষার আওতায় আনা হয়েছে।

এ সমীক্ষার আওতায় দশম শ্রেণি পাশ করেননি এমন শিক্ষার্থী যেমন রয়েছে, তেমন রয়েছেন স্নাতক, স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীও। সরকারি চাকুরে, চুক্তিভিত্তিক কর্মী, বেসরকারি কর্মী, বেকার, অবসরপ্রাপ্তদের থেকে যেমন সমীক্ষার জন্য তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, তেমনই ছোট-মাঝারি ব্যবসায়ী, দিনমজুর, কৃষক, আপৎকালীন পেশার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি, কৃষক, স্বাস্থ্যকর্মী, গৃহবধূর কাছ থেকেও সমীক্ষার তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের মোট জনসংখ্যা (ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের ২০২০ সালের মে মাসের তথ্য অনুযায়ী) ৯ কোটি ৯৬ লাখের মধ্যে আনুমানিক চার কোটি ৯১ লাখ বা প্রায় ৫০ শতাংশ নাগরিকের মানসিক স্থিতি টলিয়ে দিয়েছে সাম্প্রতিক এই মহামারি।

সারাবিশ্বে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে ৯৩ লাখ ৫৪ হাজার চারশ ২৬ জন এবং মারা গেছে চার লাখ ৭৯ হাজার আটশ ১৬ জন। তার মধ্যে ভারতে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে চার লাখ ৫৬ হাজার ১১৫ জন এবং মারা গেছে ১৪ হাজার ৪৮৩ জন।