পুলিশ হেফাজতে বাবা-ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে ভারতের তামিলনাড়ু। লকডাউনের মধ্যে দোকান খোলা রাখায় ওই দুইজনকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। লকআপে রেখে অমানষিক নির্যাতনে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের। শনিবার এ ঘটনায় রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে দোকানপাট-ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে বিক্ষোভ করে ব্যবসায়ীরা। বিক্ষোভে যোগ দেন রাজ্যের বিরোধীদলীয় এমপি ও নেতারা। সম্প্রতি পুলিশি হেফাজতে এক কৃষ্ণাঙ্গের মৃত্যুর ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছিল। ভারতেও তেমনি বিক্ষোভের আশংকা দেখা দিয়েছে। এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে এক টুইটে সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন ভারতের বিরোধী দলীয় নেতা রাহুল গান্ধী। খবর বিবিসি ও ইন্ডিয়াটুডের। 

নিহত পি জয়রাজ (৫৮) ও ছেলে ফেনিক্স তামিলনাড়ুর কোভিলপাত্তুর বাসিন্দা। তাদের পরিবার জানায়, লকডাউনের মধ্যে রাত আটটার পরও দোকান খোলা রাখায় শনিবার জয়রাজকে ধরে নিয়ে যায় কোভিলপাত্তু থানার পুলিশ। তাকে ছাড়িয়ে আনতে থানায় যান ছেলে ফেনিক্স। তবে রাত পেরিয়ে গেলেও কেউ বাড়িতে ফিরে আসেনি। তাদের দুজনকেই আটকে রাখে পুলিশ। এরপর দুইদিন ধরে তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। পায়ুদ্বারে বোতল প্রবেশ করিয়েও নির্যাতন করে পুলিশ। এতে সোমবার রাতে মারা যান ফেনিক্স। কয়েক ঘণ্টা পর মঙ্গলবার সকালে মারা যান পিতা জয়রাজ। 

থানার আশপাশের লোকজন জানিয়েছে, দুইদিন পর্যন্ত থানার ভেতর থেকে চিৎকার ভেসে আসছিল বাইরে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা থানার সামনে বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশ বিক্ষোভরতদের ওপরও হামলা চালায়। এতে ঘটনার রেশ ছড়িয়ে পড়ে প্রায় পুরো রাজ্যজুড়ে। সোশ্যাল মিডিয়ায়ও ছড়িয়ে পড়ে ঘটনা। এরপরই শুক্রবার ও শনিবার দুইদিন ধরে রাস্তায় জড়ো হতে থাকে বিক্ষোভকারীরা। 

এ ঘটনার পর গতকাল পিতা-পুত্রকে গ্রেপ্তারে জড়িত দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে বদলি করেছে প্রশাসন। স্থানীয় পুলিশ প্রধান অরুণ বালাগোপালন জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এরইমধ্যে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী ই পালানিস্বামী মৃতের পরিবারকে ৪০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেছেন।