একা রামে রক্ষা নেই, সুগ্রীব দোসর! ব্যাপারটা ঠিক ওই রকমই দাঁড়াচ্ছে। রামের ‘আসল’ জন্মভূমি নিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছে প্রতিবেশী দুই হিন্দুপ্রধান দেশ ভারত ও নেপাল। প্রথমে নেপালের প্রধানমন্ত্রী অলি বলেছেন, এরপর বললেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদীপ গিওয়ালি। সেটা অবশ্য মুখে মুখে। তবে বিষয়টাকে সত্যি প্রমাণ করার জন্যই যেন যন্ত্রপাতি নিয়ে নেমে পড়েছে দেশটির পুরাতত্ত্ব বিভাগ। দক্ষিণাঞ্চলীয় এলাকা থোরিতে শুরু হচ্ছে খননকাজ। একই সঙ্গে চলবে গবেষণাও। নেপালের পুরাতত্ত্ব বিভাগের ডিজি দামোদর গৌতম বৃহস্পতিবার জানান, একটি দায়িত্ববান সংস্থা হিসেবে দেশে সাংস্কৃতিক আর ধার্মিক স্থলগুলো নিয়ে পুরাতাত্ত্বিক খনন, অনুসন্ধান এবং বিশ্লেষণ করা হবে।  দেশের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর তাদেরও কিছু দায়িত্ব রয়েছে বলে জানান তিনি। খবর ইকোনমিক টাইমসের।

নেপালের পুরাতত্ত্ব বিভাগ জানায়, প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলির দাবি অনুযায়ী, আপাতত থোরি গ্রামে খননকাজ শুরু হবে। বিগত কয়েক বছর ধরে বারা, ধৌসা আর চিতবন জেলায় খননকার্য চালানো হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়। থোরিতে খননকাজ শুরু করার কারণ অলিই। নেপালের প্রধানমন্ত্রীর দাবি অনুযায়ী নেপালি ভাষায় রামায়ণ অনুবাদ করা কবি ভানুভক্তের জন্মবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে সোমবার অলি দাবি করেন, সীতার জন্মস্থল যেমন নেপালের জনকপুরে (আগে নাম ছিল মিথিলা), তেমনই রামের জন্মভূমিও বীরগঞ্জের কাছে থোরিতে। সেটিই আসল অযোধ্যা।

পুরাতত্ত্ব বিভাগের ডিজি দামোদর গৌতমের কথা অনুযায়ী, খুব শিগগির একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হবে। যেখানে ইতিহাসবিদ, সাংস্কৃতিক বিশেষজ্ঞ, ধার্মিক নেতা, শিক্ষক, গবেষকরা উপস্থিত থাকবেন। এর পর খননের প্রধান স্থান নির্ধারণ করা হবে।

তিনি প্রশ্ন তোলেন, তখন যাতায়াত ব্যবস্থা যা ছিল, তাতে ভারতের অযোধ্যা আর নেপালের জনকপুরের দূরত্বে রাম-সীতার বিয়ে হওয়া আদৌ সম্ভব? তার অভিযোগ, সাংস্কৃতিক আগ্রাসনেই নেপালের হাত থেকে রাম এবং অযোধ্যাকে ছিনিয়ে নিয়েছে ভারত।

তবে নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদীপ গিওয়ালি বুধবার বলেছেন, ‘রামায়ণ সভ্যতা নিয়ে এখনো ভারতে ও নেপালে গবেষণা চলছে। কেবল বিশ্বাসের ভিত্তিতে সমস্ত বিষয় আমরা অনুসরণ করে চলেছি। এর মধ্যে কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।’

ভারতীয় রাজনীতির অন্যতম ‘অ্যাজেন্ডা’ রামজন্মভূমিকে নেপালের বলে দাবি করে সম্প্রতি বিতর্ক উসকে দেন কেপি শর্মা অলি। তার দাবি ছিল, ‘রাম আদতে একজন নেপালি। রামের আসল জন্মভূমি অযোধ্যাও ভারতে নয়, নেপালে। কাঠমান্ডুর কাছে সে ছোট্ট গ্রাম অযোধ্যা। সেখানেই জন্ম হয়েছিল রামের।’

অলি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি সীতা আমাদের দেশের, রামও এই দেশের। যে অযোধ্যায় রাম জন্মেছিল, সেই গ্রাম নেপালে, ভারতে নয়।