- আন্তর্জাতিক
- গোত্র রক্ষায় প্রাণ দেয় ব্যাকটেরিয়া
গোত্র রক্ষায় প্রাণ দেয় ব্যাকটেরিয়া

অন্যের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করাকে বলা হয় অলট্রুইজম। মানবসভ্যতার ইতিহাসে এর বহু উদাহরণ আছে। এমনটা শুধু মানুষের মধ্যেই দেখা যায় না। সমাজ বা গোত্র তৈরি ও প্রতিপালনে মানুষের থেকে অনেকটাই এগিয়ে মৌমাছি, পিঁপড়েরা। তাদের মধ্যে অন্যের জন্য নিজের জীবন দেওয়ার প্রবণতা দেখা যায় সবচেয়ে বেশি। তা ছাড়া বাদুড় ও ভার্ভেট প্রজাতির বানরও নিজের কথা না ভেবে বিপদে পড়া অন্যকে সাহায্য করে।
বৃহত্তর স্বার্থে নিজেকে উৎসর্গ করার ধর্ম কি ব্যাকটেরিয়ার মতো ক্ষুদ্র জীবের মধ্যেও দেখা যায়? টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জীববিজ্ঞানী সৌভিক ভট্টাচার্যের গবেষণায় জানা গেছে, ব্যাকটেরিয়ারাও শত্রুর আক্রমণ থেকে অন্যদের বাঁচাতে গিয়ে নিজেকে নিয়ে ভাবে না। শুধু তাই নয়, মৃত্যুর সম্মুখীন হয়ে বার্তাও পাঠায়।
সৌভিক, তার সহকর্মী ডেভিড ওয়াকার ও ল্যাবরেটরির প্রধান গবেষক রাসিকা হার্শে ব্যাকটেরিয়ার নিজেকে বলিদানের ধর্মই শুধু পরীক্ষা করেননি, গোত্রের বাকি সদস্যদের পাঠানো শেষ বার্তাটিও পড়ে ফেলেছেন বলে নেচার কমিউনিকেশনস জার্নালে প্রকাশিত নিবন্ধে দাবি করা হয়েছে।
বিশ্বব্যাপী চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীদের ঘুম কেড়ে নিয়েছে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্ট ব্যাকটেরিয়া। এরা অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধেও লড়াই করতে পারে। এ জন্য এরা রূপ বদলায়। কীভাবে ব্যাকটেরিয়া অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় এবং স্বজাতিকে রক্ষা করে- এ বিষয়ে গবেষণা করতে গিয়ে এদের সমাজবদ্ধতা এবং অলট্রুইজম সম্পর্কে জানা যায়। অ্যান্টিবায়োটিকের হাত থেকে বাঁচতে ব্যাকটেরিয়া একাধিক পদ্ধতি অবলম্বন করে, যার মধ্যে অন্যতম বায়োফিল্ম তৈরি করা। বায়োফিল্ম আসলে বহু ব্যাকটেরিয়ার সমন্বয়ে তৈরি কলোনি। এই কলোনির মধ্যে ব্যাকটেরিয়ার ক্ষতির আশঙ্কা অনেকটাই কমে যায়।
ব্যাকটেরিয়ার কলোনির অ্যান্টিবায়োটিকের হাত থেকে বাঁচার আরও একটি উপায় হলো সোয়ার্মিং। একাধিক ব্যাকটেরিয়ার কোনো কঠিন বস্তুর উপরিভাগে ফ্লাজেলা নামক পায়ের সাহায্যে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়াকে বলা হয় সোয়ার্মিং। এমন ফ্লাজেলাযুক্ত ব্যাকটেরিয়ার কলোনিকে বলা হয় সোয়ার্ম। এরা বায়োফিল্মের মতো এক জায়গায় আটকে থাকে না। সূত্র: আনন্দবাজার।
মন্তব্য করুন