ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩

ইসরায়েলের যে গ্রামকে ‘শ্মশান’ বানিয়েছে হামাস

ইসরায়েলের যে গ্রামকে ‘শ্মশান’ বানিয়েছে হামাস

হামাস বন্দুকধারীদের ব্যবহার করা মোটর সাইকেলের ধ্বংসাবশেষ পড়ে আছে কাফার আজা গ্রামে। ছবি: বিবিসি

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০২৩ | ১০:৫৮ | আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২৩ | ১০:৫৮

গাজা এবং ইসরায়েল সীমান্ত ঘেঁষা একটি গ্রাম কাফার আজা। এ গ্রামটি যেন যুদ্ধের প্রথম কয়েক বিধ্বংসী দিনের একটি প্রতিচ্ছবি। শনিবার সকালে সীমান্তের কাঁটাতার ভেঙ্গে হামাস সদস্যরা গ্রামে ঢুকে যাদের হত্যা করেছে তাদের মৃতদেহ সংগ্রহ করতেই এখন ব্যস্ত গ্রামবাসী। পুরো গ্রামটিই এখন ‘শ্মশান’। 

সারাদিন ধরে বেসামরিক নাগরিকদের মৃতদেহের ধ্বংসাবশেষ সংগ্রহে ব্যস্ত ছিলেন যেসব ইসরায়েলি সেনা, তারা বলছেন সেখানে আসলে গণহত্যা হয়েছে। তাদের কাছে মনে হয়েছে শনিবার আক্রমণের প্রথম কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেখানে বেশিরভাগ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।

ইসরায়েলের প্যারাট্রুপারদের একটি অভিজ্ঞ দলের ডেপুটি কমান্ডার দাভিদি বেন জায়ন জানিয়েছেন, ইসরায়েলি সেনাদের ১২ ঘণ্টা লেগেছে গ্রামটিতে পৌঁছাতে।

তিনি বলেন, ‘ঈশ্বরকে ধন্যবাদ যে আমরা অনেক শিশু ও তাদের অভিভাবকদের জীবন রক্ষা করতে পেরেছি। দুঃখজনকভাবে ককটেলে অনেকের শরীর পুড়ে গেছে। তারা (হামাস) ছিল খুব আগ্রাসী, পশুর মতো।’

বেন জায়ন বলেন, হামাস বন্দুকধারীরা শিশুসহ পরিবারের সদস্যদের হত্যা করেছে। তারা সবাইকে খুন করেছে, যাদের কোন অস্ত্র ছিলো না, কিছুই ছিলো না। একেবারেই সাধারণ নাগরিক যারা সকালের নাশতা করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন। এর মধ্যে কয়েকজনের শিরোচ্ছেদ করা হয়েছে।

মৃতদেহ বহনকারী একটি ব্যাগের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে আরেকজন বলেন, তাকে খুন করার পর তার শিরোচ্ছেদ করা হয়েছে সামনের বাগানে।

কাফার আজা গ্রামটিই আসলে হামাস বন্দুকধারীদের মানবতা বিরোধী অপরাধের একটি প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

আরও অন্য প্রতিবেশী গ্রামগুলোর মতো এই গ্রামের মানুষের কাছে এটি এসেছে একটি বিস্ময় হয়ে।

কিবুতয গ্রামের নিরাপত্তার দায়িত্বে যারা ছিলেন তারা আসলে সামরিক অভিজ্ঞতা আছে এমন গ্রামবাসীদের নিয়েই তৈরি হয়েছিলো। তারা হামলাকারীদের সাথে লড়াইয়ে নিহত হয়েছে।

কাফার আজা গ্রামে ইসরায়েলি সেনাদের অবস্থান। ছবি: বিবিসি

অপরাপর ইসরায়েলিদের মতো কালো প্লাস্টিক ব্যাগে করে গ্রামের কেন্দ্র থেকে তাদের মৃতদেহ সরানো হয়েছে মঙ্গলবার সকালে।

তবে গাজাতেও অনেক বেসামরিক মানুষ মারা গেছে। আন্তর্জাতিক আইনে বেসামরিক নাগরিকদের জীবন রক্ষার কথা বলা হয়েছে।

এটা পরিষ্কার যে অসংখ্য বেসামরিক নাগরিক হত্যা করে হামাসের হামলাকারীরা যুদ্ধ সম্পর্কিত আইনগুলোর মারাত্মক লঙ্ঘন করেছে।

তবে হামাসের হামলায় নিহত বেসামরিক নাগরিকদের সাথে ফিলিস্তিনের বেসামরিক নাগরিকদের মৃত্যুর তুলনাকে প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরায়েল।

মেজর জেনারেল আইতাই ভেরুব কিবুতয পুনর্দখলে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার দাবি ইসরায়েল যুদ্ধ আইনকে সম্মান করে এর বাধ্যবাধকতা মেনে চলেছে।

‘আমি নিশ্চিত আমরা যুদ্ধ করছি আমাদের মূল্যবোধ ও সংস্কৃতির জন্য...আমরা শক্তিশালী ও আক্রমণাত্মক কিন্তু আমরা আমাদের নৈতিক মূল্যবোধকে সমুন্নত রাখি। আমরা ইসরায়েলি, আমরা ইহুদি’।

যুদ্ধ আইনগুলো লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি।

তবে এটা নিশ্চিত যে যত বেশি ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু হবে ইসরায়েলকে তত বেশি সমালোচনার মুখে পড়তে হবে।

একজন সেনা তার নাম বলতে রাজী হননি। তিনি বলছিলেন যে যখন তারা গ্রামটিতে পৌঁছান তখন সেখানকার ‘সব জায়গায় সন্ত্রাসীরা’।

আরও পড়ুন