ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩

নেপালে ভূমিকম্প

হাজার হাজার বাড়িঘর মিশে গেছে ধুলোয়

হাজার হাজার বাড়িঘর মিশে গেছে ধুলোয়

ভূমিকম্পের পর বাড়িগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ছবি: এএফপি

সমকাল ডেস্ক

প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২৩ | ১৬:২৭ | আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২৩ | ২২:২৭

নেপালের পশ্চিমাঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা দেড়শ ছাড়িয়েছে। আহত কয়েকশ মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাজার হাজার বাড়িঘর ধুলার সঙ্গে মিশে গেছে। পুলিশ, সেনাবাহিনী ও দুর্যোগ মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ সমন্বিতভাবে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গত শুক্রবার মধ্যরাতে রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৪ মাত্রার এ ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় জাজারকোট ও রুকুম পশ্চিম জেলা। শক্তিশালী কম্পন অনুভূত হয় নেপালের অন্য এলাকাগুলোতেও। এ ছাড়া ভারতের রাজধানী দিল্লিসহ বিভিন্ন এলাকায় ভূকম্পন অনুভূত হয়। 

নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে ৫০০ কিলোমিটার পশ্চিমে ক্ষতিগ্রস্ত জেলা দুটিতে ব্যাপক উদ্ধার তৎপরতা চলছে। স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, এসব এলাকা দুর্গম হওয়ায় এবং প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে উদ্ধার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। নেপাল পুলিশ, সেনাবাহিনী ও দুর্যোগ মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের উদ্ধারকর্মীরা অংশ নিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের জিওলজিক্যাল সার্ভে জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল হিমালয় পর্বতমালায় ভূপৃষ্ঠ থেকে অপেক্ষাকৃত কম গভীরে।

নেপাল সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কৃষ্ণ প্রসাদ ভান্ডারি বলেন, দুর্গত এলাকায় সেনাসদস্যদের পাঠানো হয়েছে। সুরখেতে আট প্লাটুন সেনাসহ হেলিকপ্টারে উদ্ধার অভিযান চলছে। অন্যান্য এলাকায়ও হেলিকপ্টার পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, জাজারকোট ও রুকুমের পশ্চিমে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বহু ঘরবাড়ি ধসে পড়েছে। হতাহতও বেশি।

রুকুম পশ্চিমের আথাবিসকোট পৌরসভার মেয়র রবি কেসি ও স্থানীয় সাংবাদিক অর্জুন বিস্তা বলেন, মাঝরাতে প্রায় সাত সেকেন্ড ধরে কম্পন চলে। কয়েকবারও অনুভব করেছেন। প্রায় ৩৫ হাজার জনসংখ্যার আথাবিসকোট পৌরসভায় কয়েক হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আহতদের রাঞ্ঝার নেপাল সামরিক হাসপাতাল, নেপালগঞ্জ পুলিশ হাসপাতাল ও ভেড়ি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নেপালের পশ্চিমাঞ্চলীয় কর্ণালি প্রদেশের পুলিশপ্রধান ভীম প্রসাদ ধাকাল জানান, ভূমিকম্পের পরপরই পুলিশসহ নিরাপত্তা কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধার কাজ শুরু করেন। 

শনিবার নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। জাজারকোট জেলার পুলিশপ্রধান সুরেশ সুনার রয়টার্সকে বলেন, ভূমিকম্পে ক্ষতির প্রকৃত চিত্র এখনই বর্ণনা করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রচণ্ড ঠান্ডা ও দুর্গম এলাকায় হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতি পুরোপুরি নির্ণয় সম্ভব হচ্ছে না। সন্তোষ রোক্কা নামে অপর এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, বহু বাড়িঘর ভেঙে পড়েছে; লোকজন গৃহহীন হয়ে পড়েছেন।

এর আগে ২০১৫ সালে নেপালে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়। তখন রাজধানী কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছিল। নেপালের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ ওই ভূমিকম্পে নিহত হন ৮ হাজার ৯৬৪ জন। প্রায় ২২ হাজার মানুষ আহত হন।
 

আরও পড়ুন