- আন্তর্জাতিক
- পার্লামেন্ট ও আইনপ্রণেতাদের ‘অবরুদ্ধ’ করে রেখেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী
পার্লামেন্ট ও আইনপ্রণেতাদের ‘অবরুদ্ধ’ করে রেখেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী

নেপিদোতে পার্লামেন্টের সামনের রাস্তাটি বন্ধ করে দিয়েছে সেনাবাহিনী- ছবি: বিবিসি
মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোতে পার্লামেন্ট সদস্যদের বাসভবনের বাইরে কড়া পাহারা দিচ্ছেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। একইসঙ্গে পার্লামেন্টের সামনের রাস্তাটিও বন্ধ করে দিয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।
সোমবার কমপক্ষে দুইজন আইনপ্রণেতা এ খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন। খবর বিবিসির
সাই লিন মিয়াত নামে হাউসের এক প্রতিনিধি জানিয়েছেন, অধিবেশন চলার সময়টাতে আইনপ্রণেতারা যে সরকারি ভবনগুলোতে বাস করেন, তার বাইরের প্রবেশ মুখে সামরিক ট্রাক দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে।
ভেতরে যারা রয়েছেন তারা সবাই সুস্থ থাকলেও কাউকে বের হতে দেওয়া হচ্ছে না বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে নেপিদোতে পার্লামেন্টের সামনের রাস্তাটিও বন্ধ করে দিয়েছে সেনাবাহিনী। বন্ধ রাস্তায় ব্যারিকেড দেওয়ার পাশাপাশি ভারী সামরিক যান ও অস্ত্র নিয়ে দাঁড়িড়ে থাকতে দেখা গেছে সেনা সদস্যদের।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ইয়াঙ্গনেও প্রধান প্রধান সড়কে ট্রাকে করে পতাকা হাতে সেনা সমর্থকদের ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে।
এছাড়া নেপিদোর উত্তরাঞ্চলে সামরিক বাহিনীর আগ্নেয়াস্ত্র, ট্যাংক এবং হেলিকপ্টার উড়তে দেখা গেছে। একই এলাকায় পার্লামেন্টে যাওয়ার প্রধান প্রধান সড়ক বন্ধ করে দিয়েছে তারা।
এর আগে সোমবার ভোরে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি, প্রেসিডেন্ট উয়িন মিন্ট এবং ক্ষমতাসীন দলের সিনিয়র নেতাদের আটকে জরুরি অবস্থা জারি করে দেশটির সেনাবাহিনী। ‘নির্বাচনে জালিয়াতি’র প্রতিক্রিয়া হিসেবে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।
নিজেদের নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশনে একটি ভাষণে মিয়ানমার সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ‘নির্বাচনে জালিয়াতি’র প্রতিক্রিয়ায় এ অভিযান চালানো হয়েছে। সেনাপ্রধান মিন অং লাইং-এর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে এবং এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হবে।
সেনা অভ্যুত্থানের পর ক্ষমতা দখলে নিয়েছেন দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ এবং সেনাপ্রধান মিন অং লাইং সরকার ও প্রভাবশালী সামরিক বাহিনীর মধ্যে কয়েকদিন ধরে দ্বন্দ্ব ও উত্তেজনার পর এ ঘটনা ঘটল।
এর আগে ১৯৬২ সালে এক অভ্যুত্থানের পর দেশটি টানা ৪৯ বছর সামরিক বাহিনীর হাতে শাসিত হয়েছে।
গত বছরের ৮ নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে সু চির দল এনএলডি নিরঙ্কুশ জয় পায়। পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য যেখানে ৩২২টি আসনই যথেষ্ট, সেখানে এনএলডি পেয়েছে ৩৪৬টি আসন। সোমবার থেকে নতুন পার্লামেন্টের অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু সেনাবাহিনী সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) ভোটে প্রতারণার অভিযোগ তুলে ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং নতুন করে নির্বাচন আয়োজনের দাবি তোলে। তারপর থেকেই দেশটিতে আবার সামরিক অভ্যুত্থানের আশঙ্কা দেখা দেয়।
মন্তব্য করুন