‘মৃত’ ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধার করে নতুন নাম দিয়ে ‘ফের বিয়ে’
পরে হরিপ্রসাদকে মন্দিরে নিয়ে বিয়ে দেওয়া হয়। ছবি: সংগৃহীত
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ ডিসেম্বর ২০২৩ | ১৪:২৪
ভারতের উত্তরাখণ্ডের হিমালয় ট্র্যাজেডিতে তিনি নিখোঁজ হন। সহযাত্রীর দ্বারা নিশ্চিত হয়ে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। পরে কালিম্পংয়ের নিখোঁজ বাসিন্দা হরিপ্রসাদ ঘিমির (৭১) বাড়িতে ফিরে আসেন। হিন্দু ঐতিহ্য মতে, হরিপ্রসাদকে নতুন নাম দিয়ে তার স্ত্রীর সঙ্গে আবারও বিয়ে দেওয়া হয়।
বুধবার টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
হরিপ্রসাদ ঘুরে বেড়াতে ভালোবাসেন। বিশেষ করে ধর্মীয় স্থানে। আর এবার গিয়েছিলেন হরদ্বার। গত জুনের মাঝামাঝি আকস্মিক বন্যায় তিনি নিখোঁজ হন। এরপর গত ২৮ জুন তার ছেলে মেঘনাদ হরদ্বার একটি ফোন পান। ফোনকারী নিজেকে গঙ্গাধর বলে পরিচয় দিয়ে বলেন, বন্যায় হরিপ্রসাদ মারা গেছেন।
হরিপ্রসাদের ছেলে মেঘনাদ বলেন, বাবার মৃত্যুর পরদিন তার আত্মার মুক্তির জন্য বিভিন্ন ধরনের আচার অনুষ্ঠান করা হয়। কারণ, ওই ফোনকারী আমার বাবার দেহ অগ্নিকুণ্ডে পাঠানো হয়েছিল বলে জানান।
দুধ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহকারী ৪০ বছর বয়সী মেঘনাদ বলেন, ‘আমরা বাড়িতে বাবার শেষকৃত্য করেছি।’
মেঘনাদ আরও জানান, ‘আমার মাথার চুল ফেলে দেই। মায়ের সিঁদুর ও পোটেও (নেপালি বিবাহিত মহিলাদের পরা নেকপিস) ডুবিয়ে দেওয়া হয়।’
এরপর গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (জিটিএ) কার্যনির্বাহী সদস্য কল্পনা তামাং মেঘনাদকে ফোন দিয়ে বলেন, তার বাবা হরিপ্রসাদ বেঁচে আছেন এবং বাড়ি ফিরছেন। তামাং জানান, হরিপ্রসাদ সম্পর্কে তাকে অবহিত করেছিলেন পর্যটনের নির্বাহী পরিচালক সোনম ভুটিয়া।
তামাং আরও জানান, উত্তরখণ্ডে অবস্থানরত কলকাতা থেকে উদ্ধারকারী দলের এক বন্ধুর কাছ থেকে ফোন পাই। সে জানায়, উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে পাহাড় থেকে একজন বৃদ্ধ নেপালি রয়েছেন। আমি তার সঙ্গে কথা বলতে চাই। পরে তার সঙ্গে নেপালি ভাষায় কথা বলেছি। পরে গত ২ জুলাই হরিপ্রসাদকে কালিম্পং পাঠানো হয়।
কালিম্পং পৌঁছানোর পর হরিপ্রসাদকে বাড়িতে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। হিন্দু বিশ্বাসমতে, কাউকে মৃত গণ্য করে আচার-অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা হলে তাকে পুনর্জন্ম নিতে হয়। এর ফলে হরিপ্রসাদের নামকরণ অনুষ্ঠান করা হয়। মেঘনাধ বলেন, ‘পরে আমার মায়ের সঙ্গে গ্রামের মন্দিরে তার বিয়ে দেওয়া হয়।’