- আন্তর্জাতিক
- বগুড়ার নওয়াব প্যালেসের সেই কুমিরটি বন বিভাগে হস্তান্তর
বগুড়ার নওয়াব প্যালেসের সেই কুমিরটি বন বিভাগে হস্তান্তর

প্যালেসের অভ্যন্তরে জলাধারে থাকা কুমিরটিকে বুধবার বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়- সমকাল
বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী নওয়াব প্যালেসের অভ্যন্তরে জলাধারে থাকা একটি কুমিরকে বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বুধবার সকালে বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল রাজশাহীর একদল কর্মী কুমিরটি নিয়ে যায়।
বগুড়ায় শিক্ষার্থীদের পরিবেশবাদী সংগঠন টিম ফর এনার্জি অ্যান্ড ইনভার্নমেন্টাল রিসার্চের (তীর) কর্মীরা পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সংগঠনের উপদেষ্টা আরাফাত রহমান জানান, বন বিভাগের কর্মকর্তারা কুমিরটিকে আপাতত তাদের রাজশাহীর রেসকিউ সেন্টারে রাখবেন। পরে সেটি কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রে নেওয়া হবে।
প্রায় দেড়শ বছর আগে ব্রিটিশদের কাছ থেকে 'নওয়াব' উপাধি পাওয়া আব্দুস সোবহান চৌধুরী বগুড়া শহরের সূত্রাপুর এলাকায় তাদের বসবাসের জন্য বাড়ি নির্মাণ করেন। পরে এটা 'নওয়াব প্যালেস' হিসেবে পরিচিতি পায়। নওয়াব পরিবারের অন্যতম সদস্য পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী চৌধুরী ওই প্যালেসেই বসবাস করতেন। তার মৃত্যুর পর ছোট ভাই ওমর আলী চৌধুরী ১৯৯৮ সালে প্যালেসের ভেতরে 'মোহাম্মদ আলী প্যালেস মিউজিয়াম এবং অ্যামিউজমেন্ট পার্ক' গড়ে তোলেন। তখন সেখানে দর্শনার্থীদের জন্য একটি জলাধার নির্মাণ করে তাতে ঘড়িয়াল ও কুমির ছাড়া হয়।
পরে মোহাম্মদ আলী চৌধুরীর কানাডা প্রবাসী ছোট ছেলে হামদে আলী চৌধুরী প্যালেসে বসবাস শুরু করেন। এরপর কানাডা প্রবাসী তার বড় ভাই হাম্মদ আলী চৌধুরী ২০১৬ সালের এপ্রিলে ওই নওয়াব প্যালেসটি স্থানীয় তিন ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেন।
নওয়াব প্যালেসের তিন ক্রেতার একজন বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান মিলন জানান, কুমিরটিকে তারা হস্তান্তরের কথা জানিয়ে কিছুদিন আগে বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, 'আমাদের এখানে কুমিরটির যথাযথ যত্ন নেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। তাই আমরা সেটি বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করতে চেয়েছি। তারা আমাদের প্রস্তাবে সম্মত হন। আশা করি বন বিভাগের ব্যবস্থাপনায় কুমিরটি আরও ভালো থাকবে।'
তীরের উপদেষ্টা আরাফাত রহমান জানান, বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল রাজশাহীর পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবিরের নেতৃত্বে কয়েকজন কর্মী বুধবার সকালে নওয়াব প্যালেসে আসেন। এরপর সেখানকার জলাধার থেকে কুমিরটি জাল দিয়ে ধরে উপরে তোলা হয়। প্রায় দুই ঘণ্টা পর সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তারা কুমিরটি নিয়ে রাজশাহীর উদ্দেশে রওনা হন।
মন্তব্য করুন