আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান করা হয়েছে মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দকে। তিনি তালেবানের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্যদের একজন। প্রায় দুই দশক ধরে তালেবানের নীতিনির্ধারণী সর্বোচ্চ পর্ষদ শূরা কাউন্সিলের নেতৃত্বে ছিলেন তিনি। তবে বহু নেতা থাকতে কম পরিচিত আখুন্দকে কেন প্রধানমন্ত্রী করা হলো, তা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বিশ্নেষণ করা হচ্ছে। খবর দ্য হিন্দু ও রয়টার্সের।

গত ১৫ আগস্ট রাজধানী কাবুল দখল করার পর সম্ভাব্য তালেবান সরকারের প্রধান হিসেবে আবদুল গনি বারাদারের নামই বেশি আলোচনায় ছিল। কারণ তিনি তালেবানের প্রয়াত প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের ভগ্নিপতি ও ঘনিষ্ঠজন। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় তালেবানের পক্ষে নেতৃত্ব দেন তিনি। কিন্তু তাকে না করে আখুন্দকে কেন প্রধানমন্ত্রী করা হলো।

ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য হিন্দু বলছে, তালেবানের নেতা আখুন্দ বেশ রহস্যময় ব্যক্তি। তালেবানের সূচনালগ্ন থেকেই সংগঠনের ভেতরে তিনি প্রভাবশালী নেতা হিসেবে বিবেচিত। কিন্তু তালেবান ও মুজাহিদীনরা যখন এক হয়ে সোভিয়েত সেনাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছিল, তখন তাতে আখুন্দর সংশ্নিষ্টতা ছিল না।

তবে আখুন্দের গোড়া অন্য জায়গায় শক্ত। তালেবানের মধ্যে ধর্মীয় ইস্যুতে তার ব্যাপক প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। ২০০১ সালে তালেবান বুদ্ধের ভাস্কর্য ভেঙে ফেলে। শূরার সদস্য হিসেবে আখুন্দ এই ভাস্কর্য ভাঙতে মোল্লা ওমরকে পরামর্শ দিয়েছিলেন বলে মনে করা হয়।

রয়টার্স জানায়, আখুন্দ তালেবানের আগের সরকারেও ছিলেন। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকা তৎকালীন তালেবান সরকারে প্রথমে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পরে উপপ্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
অনেক পর্যবেক্ষকের ধারণা, আখুন্দের বয়স ৬০ থেকে ৭০ বছরের মাঝামাঝি। তালেবানের এক নেতা জানিয়েছেন, আখুন্দ প্রায় ২০ বছর ধরে শূরা কাউন্সিলের প্রধানের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এই দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে তিনি বেশ সুনাম অর্জন করেন। তিনি তালেবানের মধ্যে ধর্মীয়, তথা রাজনৈতিক নেতা হিসেবে বেশি পরিচিত।

২০০১ সালে তালেবান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরও সংগঠনের ভেতরে আখুন্দের প্রভাব বজায় থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বাহিনীর হামলার মুখে তালেবান নেতারা দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। সে সময় আখুন্দ পাকিস্তানে চলে যান। সেখানে বসেই তিনি তার কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকেন।