আফগানিস্তানের নবগঠিত তালেবান সরকারকে  বুধবার পর্যন্ত সরাসরি স্বীকৃতি দেয়নি কোনো দেশ। তবে চীন কয়েক সপ্তাহের 'নৈরাজ্যের' অবসান ঘটাতে সরকার ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে। অন্যদিকে কাতার বলেছে, তালেবান প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তালেবান সরকারের কিছু ব্যক্তির রেকর্ড তাদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। খবর বিবিসি, আলজাজিরা, এএফপি ও রয়টার্সের।

গত মাসের মাঝামাঝি ক্ষমতা গ্রহণের তিন সপ্তাহ পর মঙ্গলবার তালেবান যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করেছে তাতে দলটির বাইরে কাউকে স্থান দেওয়া হয়নি। নেই কোনো নারী। সরকারে মূলত কট্টরপন্থিরা স্থান পেয়েছেন।

বুধবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দৈনিক ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন প্রতিবেশী দেশটিতে শৃঙ্খলা ফেরাতে তালেবানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। নতুন তালেবান সরকারের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখতে তারা প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন তিনি। ওয়াং বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনকে চীন অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে। এতে তিন সপ্তাহের নৈরাজ্যের অবসান হয়েছে। দেশটিতে শৃঙ্খলা ফেরানো এবং পুনর্গঠনে এর প্রয়োজন ছিল।

ওয়াং জানান, চীন আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও ভূখণ্ডগত অখণ্ডতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আগস্টে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা গ্রহণ করার পর চীন একটি 'উন্মুক্ত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক' সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য আহ্বান জানিয়েছিল। ওয়াং বলেন, 'আমরা আশা করছি আফগানিস্তানের নতুন কর্তৃপক্ষ উদারভাবে সব জাতি ও উপদলের কথা শুনবে, যেন তারা নিজেদের জনগণের আকাঙ্ক্ষা ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারে।'\হযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তালেবান সরকার নিয়ে চীনেরও সত্যিকার সমস্যা রয়েছে। তাই বেইজিং তালেবান নিয়ে একটা কিছু করবে বলে তার মনে হয়। পাকিস্তান, রাশিয়া ও ইরানের তালেবান নিয়ে সমস্যা রয়েছে বলে মন্তব্য করেন বাইডেন। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, তালেবান বলেছে এটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার। তাদের মূল্যায়ন করা হবে কাজের ভিত্তিতে, কথায় নয়।

কাতার বলেছে, তালেবান প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়েছে। তাদের কাজের মাধ্যমে বিচার করা উচিত। তালেবান যে এখন আফগানিস্তানের আসল শাসক, সেটা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। তবে কাতারও তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান বলেছেন, তিনি সতর্কভাবে আফগান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি বলেন, এই অন্তর্বর্তী সরকার কতদিন থাকবে তা বলা যাচ্ছে না।

জাতিসংঘের মুখপাত্র ফারহান হক বলেন, এই বিশ্ব সংস্থাটি কোনো সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার কাজ করে না। এ কাজ করে সদস্য দেশগুলো। তবে আলোচনা সাপেক্ষে অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার হলে তা আফগানিস্তানে টেকসই শান্তি আনবে। তিনি দেশটিতে নারী ও মেয়েদের মানবাধিকার রক্ষার ওপর জোর দেন।

জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস বলেছেন, আফগানিস্তান পরিস্থিতি নিয়ে তিনি তেমন আশাবাদী হতে পারছেন না। নতুন তালেবান সরকারে অন্য দলের স্থান হয়নি। কাবুলে বিক্ষোভে সহিংসতা চালিয়েছে তালেবান। এগুলো আশাবাদী হতে সাহায্য করে না।