আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর চোখের পলকে প্রায় পুরো দেশ দখল করে নেয় তালেবান। দেশটির প্রায় সব জেলা (পানশির বাদে) খুব দ্রুত তালেবানের হাতে চলে যায়; আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাদের কাছে হারতেই থাকেন।

কিন্তু কীভাবে এত দ্রুত একটি দেশ দখল করে নিল তালেবান? গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এ নিয়ে জোর আলোচনা করছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও কূটনীতিকরা। তাদের কাছেও একই প্রশ্ন, কীভাবে তালেবান এত দ্রুত দেশটিকে দখল করে নিতে পারে।

এরমধ্যেই একটি উত্তর ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়েছে বলে জানিয়েছে দ্য আমেরিকান মিরর স্পেক্টেটর। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের শীর্ষ নিরাপত্তা যন্ত্রপাতি এবং গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই) তালেবানকে গত ২০ বছর ধরে শুধু আশ্রয়ই দেয়নি, তাদের অনেক সাহায্যও করেছে। এমনকি তাদের দেশকে একটি কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার হিসেবে ব্যবহারও করতে দেওয়া হয় তালেবানকে। আর এর মাধ্যমে তালেবানকে তাদের হাজার হাজার সৈন্য চালানোর এবং দ্রুত আফগানিস্তান দখল করার সুযোগ দেওয়া হয়।

মিরর স্পেক্টেটর এও বলছে, সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, তালেবানদের সাহায্য করার জন্য চীনের তৈরি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ড্রোন দিয়েছে পাকিস্তান। এমনকি বলা হচ্ছে, তালেবানের পানশির দখলে সাহায্য করতে উপত্যকাটিতে ড্রোন হামলাও চালিয়েছে পাকিস্তান। যে উপত্যকাটি এখনও তালেবান প্রতিরোধকারী বাহিনীর শেষ ঘাঁটি বলা হচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, পাকিস্তানের কর্মকর্তারা আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসার জন্য বিশ্বব্যাপী নিন্দিত সন্ত্রাসী সংগঠনের পক্ষে থাকতে একটুও লজ্জা পাননি। যদিও পাকিস্তান সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দুই দশকের যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি বড় মিত্র ছিল বলে মনে করা হয়।

প্রতিবেদন বলছে, পাকিস্তান সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য বছরের পর বছর ধরে পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে বিলিয়ন বিলিয়ন মার্কিন ডলার আনন্দের সঙ্গে গ্রহণ করেছে। অথচ দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান যেই আফগানিস্তান দখল হল, সেই ঘোষণা দিয়ে বসলেন, ‘তালেবান দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙে ফেলেছে’। যা থেকে প্রকাশ প্রায় ইমরান খান আসলে কী চাচ্ছিলেন।

মিরর স্পেক্টেটর বলছে, কাউন্সিল অব ফরেন রিলেশন এবং অন্যান্য অনেক সূত্রের মতে, পাকিস্তান তালেবানের আর্থিক ও লজিস্টিক সহায়তার একটি বড় উৎস।