ঢাকা সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪

অভিবাসন ঠেকাতে কঠোর ভিসা নীতির পরিকল্পনা করছে যুক্তরাজ্য

অভিবাসন ঠেকাতে কঠোর ভিসা নীতির পরিকল্পনা করছে যুক্তরাজ্য

ছবি: বিবিসি

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩ | ১৩:৩৪

অভিবাসন রোধে ভিসা নীতিকে আরও কঠোর করার পরিকল্পনা করেছে যুক্তরাজ্য। সোমবার দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি পাঁচ দফার একটি পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। খবর বিবিসির 

গত মাসে যুক্তরাজ্য সরকারের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে, ২০২২ সালে দেশটিতে ৭ লাখ ৪৫ হাজার মানুষ অভিবাসন গ্রহণ করেছে, যেটি যুক্তরাজ্যের অভিবাসন ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এর ফলে উদ্বেগ সৃষ্টি হওয়ায় নতুন এই পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে দেশটির সরকার।

এতে যেসব পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে অভিবাসী দক্ষ কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি। আগে যেখানে তাদের ন্যূনতম বেতন ছিল ২৬ হাজার ২০০ পাউন্ড, এখন সেটি বাড়িয়ে ৩৮ হাজার ৭০০ পাউন্ড নির্ধারণ করা হয়েছে।

আর এই বেতন বৃদ্ধির ফলে গত বছর যে তিন লাখ নতুন অভিবাসী যুক্তরাজ্যে আসার যোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছিলেন, তারা আর আসতে পারবেন না বলে জানাচ্ছেন মিস্টার ক্লেভারলি।

এছাড়া নতুন এই পরিকল্পনায় পারিবারিক ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় ন্যূনতম আয়ের পরিমাণও বাড়ানো হয়েছে। ফলে এখন থেকে পারিবারিক ভিসায় যুক্তরাজ্যে যেতে হলে আবেদনকারীর ন্যূনতম আয় থাকতে হবে ৩৮ হাজার ৭০০ পাউন্ড।

সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ্যে দেয়া এক বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাজ্যে অভিবাসনের লাগাম টানা প্রয়োজন। বছরের পর বছর ধরে দেশটিতে স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ভিসার অপব্যবহার করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

"যথেষ্ট হয়েছে", বলেন মিস্টার ক্লেভারলি।

তিনি আরও বলেন, "অভিবাসন নীতি অবশ্যই স্বচ্ছ, ন্যায্য ও টেকসই হতে হবে।"

গত মাসে ২০২২ সালের অভিবাসনের তথ্য প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই দেশটিতে অভিবাসন কমিয়ে আনার ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ও তার সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির সংসদ সদস্যরা।

দেশটিতে অভিবাসীদের সংখ্যায় এমন বৃদ্ধি মিস্টার সুনাক ও ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টির জন্য একটি বড় রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। কারণ তারা ২০১০ সাল থেকেই অভিবাসন কমানোর ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে।

এছাড়া ব্রেক্সিট ভোটের পরেও দলটি যুক্তরাজ্যের সীমান্তের "নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে নেয়ার" প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।

তবে ২০১৯ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে নির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ না করেই অভিবাসীদের সংখ্যা কমানোর প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল।

তার আগে প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় ডেভিড ক্যামেরন একবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছিলেন যে, যুক্তরাজ্যে অভিবাসীর সংখ্যা বছরে এক লাখের নিচে নামিয়ে আনা হবে।

২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে অভিবাসন নীতির বিষয়টি যুক্তরাজ্যে ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।

এ অবস্থায় জনমতকে প্রাধান্য দিয়ে যুক্তরাজ্যে অভিবাসনের সংখ্যা কমানোর জন্য "যা করা প্রয়োজন তা করার" নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক।

নতুন পরিকল্পনায় স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা কর্মীদের পরিবারকে যুক্তরাজ্যে নিয়ে আসার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার কথা বলা হচ্ছে।

এছাড়া যেসব কোম্পানি তাদের বর্তমান বেতন কাঠামোর চেয়ে ২০ শতাংশ কম বেতন দিচ্ছে, তারা যেন অভিবাসী শ্রমিকদের আনতে না পারে, সে ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা বলা হচ্ছে।

পাশাপাশি বিভিন্ন দেশ থেকে যারা যুক্তরাজ্যে পড়তে আসেন, সেই সব শিক্ষার্থীরা যেন ইচ্ছা করলেই তাদের পরিবারের সদস্যদের দেশটিতে আনতে না পারেন, সে ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

whatsapp follow image

আরও পড়ুন

×