ইউক্রেনে যুদ্ধ পরিচালনার জন্য নতুন জেনারেল নিয়োগ দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভদ্মাদিমির পুতিন। রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় সামরিক এলাকার কমান্ডার, জেনারেল আলেকজান্ডার ভরনিকভকে এ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ভরনিকভ সম্পর্কে ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফের সাবেক ডেপুটি চিফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইহোর রোমানেনকো বলেন, তাকে দ্বিতীয় চেচেন যুদ্ধের দিন থেকে 'কসাই' বলা হয়।

ইউক্রেনে রাশিয়ার বাহিনীর সর্বোচ্চ কমান্ডার হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার আগে ভরনিকভ একটি রাশিয়ান মোটর রাইফেল ডিভিশনের নেতৃত্বে ছিলেন। এর মাধ্যমে ১৯৯৯ সালের শেষের দিকে এবং ২০০০ সালের প্রথম দিকে চেচনিয়ার ডি-ফ্যাক্টো স্বাধীন দক্ষিণ রাশিয়ান প্রদেশের রাজধানী গ্রোজনিতে আক্রমণ করা হয়েছিল। এরপর রাশিয়ান বাহিনী ছোট ছোট ভাগে বিভক্ত হয়ে হামলা চালায়। রকেট আর্টিলারি, নিষিদ্ধ ক্লাস্টার বোমা এবং ক্রুজ মিসাইল হামলা চালিয়ে হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করা হয়েছিল সে সময়।

এছাড়া ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে সহায়তা করতে সেখানে সেনা পাঠায় পুতিন। ৬০ বছর বয়সী জেনারেল ভরনিকভের রাশিয়ার হয়ে সিরিয়ায় সেই অভিযান পরিচালনার অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত তিনি সেখানে দায়িত্ব পালন করেন। তাকে দায়িত্ব দেওয়ায় ইউক্রেন অভিযানের নির্দেশনা ও নিয়ন্ত্রণে পরিবর্তন আসার আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দাবি করেছেন, তার দেশের বিভিন্ন শহরে স্থলমাইন পাওয়া যাচ্ছে। রুশ সেনারা এই মাইন ফেলে গেছে। মারিউপোল শহরের মেয়র দাবি করেছেন, রুশ হামলা শুরুর পর এ পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলীয় এই বন্দরনগরীতে অন্তত ১০ হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।

রাশিয়ার ওপর বর্তমান ও ভবিষ্যৎ জ্বালানি নিষেধাজ্ঞার পরিণাম ভালো হবে না বলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মকর্তাদের সতর্ক করেছে তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংগঠন ওপেক। রাশিয়ার তেলের বিকল্প নেই বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।

এদিকে রাশিয়ার হামলা শুরুর ছয় সপ্তাহের মধ্যে ইউক্রেনের ৪০ লাখ শিশু বাড়িঘরহীন হয়েছে বলে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ সোমবার জানিয়েছে। এ ছাড়া যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ১৪২ শিশুর প্রাণহানির বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার কথাও জানিয়েছে জাতিসংঘ।

এ অভিযানের উদ্দেশ্য মহৎ: পুতিন

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভদ্মাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেনে সামরিক অভিযানে সাহসিকতা ও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছে এবং অত্যাধুনিক অস্ত্র ব্যবহার করছে। এ অভিযানের উদ্দেশ্য মহৎ। মঙ্গলবার রাশিয়ার মহাকাশচারী দিবস উপলক্ষে দেওয়া ভাষণে তিনি এই মন্তব্য করেন। পুতিন জানান, রাশিয়ার সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর কোনো বিকল্প ছিল না।

সেনাবাহিনী লক্ষ্য অর্জন করবে। মূল উদ্দেশ্য হলো দোনবাসের জনগণকে সহযোগিতা করা। পুতিন বারবার ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রুশ ভাষাভাষীদের ওপর গণহত্যা চালানোর অভিযোগ করে আসছেন। রুশ আক্রমণের ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠায় এই অভিযোগকে কাজে লাগাচ্ছেন। যদিও এমন অভিযোগের কোনো প্রমাণ হাজির করেননি তিনি।