চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের বন্দর নগর মারিওপোলের বিপর্যয়ের জন্য ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে দায়ী করেছেন এইডেন এসলিন নামের এক ব্রিটিশ সেনা। তিনি ইউক্রেন যুদ্ধে দায়িত্ব পালন করেছেন।

গত সপ্তাহে ইউক্রেনের নৌবাহিনীর সঙ্গে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন এসলিন। তারপর রুশ সংবাদমাধ্যম আরটির এক ভিডিওতে মারিওপোল বিপর্যয়ের কারণ জানাতে দেখা গেছে তাকে।

বন্দি ব্রিটিশ সেনা এসলিন বলেন, ২০১৮ সালে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। সে সময় মনে হয়েছিল তিনি ভালোর পক্ষে আছেন। কিন্তু মারিওপোলের পরিস্থিতি চোখ খুলে দিয়েছে। তিনি সেনা কমান্ডারদের শহর ছেড়ে চলে যেতে বলেছিলেন, তবে কমান্ডাররা তাতে রাজি হননি। কারণ, কিয়েভ তাদের মারিউপোলেই রাখতে চেয়েছিল।

ভিডিওতে এসলিনকে বলতে শোনা যায়, মারিওপোলের পরিস্থিতি ভয়াবহ। এ রকম পরিস্থিতি এড়ানো যেত, যদি ইউক্রেন বাহিনী মারিউপোল ছেড়ে চলে যেত। কিন্তু তাদের মারিউপোলেই থাকতে হয়েছে। আর এমন সিদ্ধান্তের পেছনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির বড় ভূমিকা ছিল। জেলেনস্কি ইউক্রেন বাহিনীকে মারিওপোল ছেড়ে চলে যেতে নির্দেশ দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি।

ইউক্রেন বাহিনীতে থাকা ওই ব্রিটিশ নাগরিক আরও বলেন, ‘আমি এমন পরিস্থিতি চাইনি। আমি মারিওপোল ছেড়ে চলে যেতে চেয়েছিলাম। কারণ, আমাদের যুদ্ধের প্রয়োজন নেই।’

এসলিন আরও বলেন, কয়েক সপ্তাহ ধরে তিনি মারিওপোলে তুমুল লড়াই চলতে দেখেছেন। আর এই লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি বদলেছে। প্রথমবারের মতো তিনি বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছেন। এসলিন বুঝতে পেরেছেন, দেশের বেসামরিক নাগরিকদের প্রতি ইউক্রেনের সেনাবাহিনী সংবেদনশীল নয়।

তিনি বলেন, দখল করা মারিওপোলের নাগরিকেরা খাদ্যসংকটে ছিল। কিন্তু ইউক্রেনের সেনাবাহিনী সুপারমার্কেট থেকে খাবার লুট করেছে। এমনকি পানির জন্য নাগরিকদের বাইরেও যেতে দেয়নি দেশটির সেনাবাহিনী। লুট হওয়া একটি সুপারমার্কেট থেকে নাগরিকেরা পানি নিতে চেয়েছিল কিন্তু ইউক্রেন বাহিনী তাদের থামিয়ে নিজেরাই পানি লুট করেছে।

ইউক্রেনের সেনাবাহিনী বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করেছে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে এসলিন বলেন, ইউক্রেনের সেনাবাহিনী অপরাধী।

এসলিন বলেন, আগে তিনি সিরিয়ায় কুর্দি বাহিনীতে ছিলেন। আইএস জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছেন। তবে মারিওপোলের অভিজ্ঞতার পর তিনি এখন আর কোনো বিদেশি বাহিনীর সঙ্গে থাকতে চান না। তিনি কেবল বাড়ি ফিরতে চান। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে চান।