পরিবারের সদস্যদের জন্য রুটি কিনতে বের হয়েছিলেন ভিক্টর গুবারেভ নামের এক ব্যক্তি। কিন্তু নিজ বাড়ির সামনেই একটি গোলা এসে তার শরীরে পড়লে তিনি নিহত হন।

গত সোমবার ইক্রেনের খারকিভ শহরে এই ঘটনা ঘটে। এদিকে বাবার এমন মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না তার মেয়ে। বাবার মরদেহের কাছে আহাজারি করতে দেখা গেছে তাকে। মেয়ের আহাজারির সেই দৃশ্য ইতোমধ্যে নেট মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। খবর রয়টার্সের

রয়টার্সের ওই প্রতিবেদনে জানা যায়, ভিক্টর গুবারেভের অ্যাপার্টমেন্টের পাশেই তার মেয়ে ইয়ানা বাচেক থাকেন। ইয়ানা পেশায় একজন ইংরেজির শিক্ষক। ইয়ানা জানান, ঘটনার দিন তিনি অনলাইনে ইংরেজি ক্লাসের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ওই মুহূর্তে বাইরে গোলাগুলির আওয়াজ শুনতে পান।

তার ভাষায়, ‘বিস্ফোরণের কথা আমার এখনও মনে আছে। আমি তখন মাত্র কেনাকাটা করে বাসায় ফিরে এসেছি এবং সঙ্গে সঙ্গেই ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ, প্রচন্ড শব্দ।’

এরপরই তার মা লিউবভ তাকে জানান, ইয়ানার বাবা বাইরে রুটিতে কিনতে গেছেন, এখনও ফেরেননি। কিন্তুেওই সময় বাইরে গোলাবর্ষণ চলার কারণে ইয়ানা বাচেককে তার সঙ্গী ইয়েভগেনি বাইরে যেতে নিষেধ করেন।

ইয়ানা বলেন, আমি  ঘরে থেকে বাবাকে ডাকতে শুরু করি। কিন্তু কোনো সাড়া পাইনি। এর কয়েক মিনিট পর ইয়ানা ঘর থেকে বের হন।  অ্যাপার্টমেন্টের বাইরে বাবার মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। বিস্ফোরণের শব্দ শুনে সেসময় সেখানে অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছায়। এরই একপর্যায়ে অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে ফটোগ্রাফারের ক্যামেরায় ধরা পড়ে ইয়ানার সেই কান্নার ছবি।

বয়টার্সের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিয়েভের কাছে বুচা শহরে গণকবর বা বন্দরনগরী মারিউপোলে চালানো ধবংসষজ্ঞ বা খারকিভের মতো শহরগুলিতে নির্বিচারে গোলাবর্ষণ চালানোকেই মূলত ইউক্রেনে 'বিশেষ সামরিক অভিযান' বলে অভিহিত করা হচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খারকিভ শহরে গত সোমবার অন্তত তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ভিক্টর গুবারেভ একজন। পূর্ব ইউক্রেনের এই শহরটি গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ আগ্রাসনের শুরু থেকে প্রায় প্রতিদিনই বোমা হামলা হচ্ছে। রাশিয়া অবশ্য ইউক্রেনের বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করার বিষয়টি বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে।