প্রস্তাবিত জীবাশ্ম জ্বালানি প্রকল্পের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই চট্টগ্রাম বিভাগে হওয়ার কারণে সেখানে বিশ্বের বৃহত্তম কার্বন বিপর্যয়ের ঝুঁকি রয়েছে বলে একটি যৌথ গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। গতকাল সোমবার মার্কেট ফোর্সেস, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ 'চট্টগ্রাম অঞ্চলে জ্বালানি পরিকল্পনা :সম্ভাব্য কার্বন বিপর্যয়' শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জীবাশ্ম জ্বালানি প্রকল্পের এই বিশাল সম্প্রসারণ প্রধানত জাপান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশি কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে অর্থায়ন করা হবে। চট্টগ্রামের প্রস্তাবিত ২০ গিগাওয়াট নতুন কয়লা ও গ্যাস বিদ্যুৎ ক্ষমতার বিরূপ প্রভাবের ওপর আলোকপাত করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। যাতে বলা হয়েছে- বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর কর্মক্ষমকালে বায়ুম লে ১ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন টন পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড যোগ হবে। অনুমান করা হচ্ছে, বিশাল নির্মাণ প্রকল্পগুলো স্থানীয় বাস্তুবিদ্যা, জলপথ, সম্প্রদায়, জীবিকা, স্বাস্থ্য এবং সেই সঙ্গে জলবায়ুর জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাতারবাড়ী-২ জাপানি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পরিকল্পিত একটি ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র, যা যুক্তিযুক্তভাবে সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক পরিকল্পনা। মাতারবাড়ী-১ ও ২ প্রকল্প দুটি বায়ু দূষণের মাধ্যমে আনুমানিক ৬ হাজার ৭০০ জনের অকাল মৃত্যু ঘটাবে। মার্কেট ফোর্সেসের নির্বাহী পরিচালক জুলিয়েন ভিনসেন্ট বলেন, আমরা যদি জলবায়ু বিপর্যয় এড়াতে বদ্ধপরিকর হই, তাহলে আমাদের নতুন কয়লা, গ্যাস এবং তেল প্রকল্প নির্মাণ বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, বাংলাদেশিরা সাশ্রয়ী মূল্যের জ্বালানিতে বিনিয়োগ চায়, দূষিত এবং ব্যয়বহুল এলএনজিতে নয়।

জাপান সেন্টার ফর সাসটেইনেবল এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোসাইটির প্রোগ্রাম ডিরেক্টর ইউকি তানাবে বলেন, জলবায়ুর ক্ষতির দিক বিবেচনা করে সুমিতোমো করপোরেশন মাতারবাড়ী-২ কয়লা প্রকল্প থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

আরও বক্তব্য দেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা বিভাগের প্রধান ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এবং বাপার যুগ্ম সম্পাদক ও ব্রতীর প্রধান নির্বাহী শারমীন মুরশিদ।