স্নায়ুযুদ্ধের পর প্রথমবারের মতো সামনের বছরগুলোতে পরমাণু বোমা তৈরির সংখ্যা বাড়তে পারে বলে শঙ্কার কথা জানিয়েছে সংঘাত, সামরিক ব্যয় ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক থিংক ট্যাংক স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরআই)। আর কয়েক দশকের মধ্যে বর্তমানে এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহারের ঝুঁকি সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে।

সোমবার নতুন এক গবেষণায় সংস্থাটি এ তথ্য জানায়। খবর আলজাজিরা ও টিআরটি ওয়ার্ল্ডের।

সংস্থাটির মতে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন এবং কিয়েভকে পশ্চিমাদের সহায়তা বিশ্বের নয়টি পরমাণু অস্ত্র সমৃদ্ধ দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়েছে।

এসআইপিআরআই জানায়, ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের জানুয়ারির মধ্যে পরমাণু অস্ত্রের সংখ্যা কিছুটা কমেছিল। পরমাণু শক্তিধর দেশগুলোর পক্ষ থেকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া না গেলে কয়েক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো বিশ্বব্যাপী নতুন ওয়ারহেড তৈরি বাড়তে পারে।

এসআইপিআরআই-এর ওয়েপনস অব ম্যাস ডেস্ট্রাকশন প্রোগ্রামের পরিচালক উইলফ্রেড ওয়ান সংস্থাটির ২০২২ ইয়ারবুকে বলেন, পরমাণু অস্ত্রের মালিক সব দেশ এ ধরনের অস্ত্র বাড়াচ্ছে বা উন্নয়ন করছে এবং সামরিক কৌশলেও পারমাণবিক অস্ত্রের ভূমিকাকে তীক্ষ্ণ করছে। এটি খুবই উদ্বেগজনক প্রবণতা।

ইউক্রেনে হামলার মাত্র তিনদিন পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দেশটির পারমাণবিক বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন। 

তিনি এ সময় হুমকি দিয়ে বলেন, রাশিয়ার পথ আগলে দাঁড়ানো দেশগুলো এমন পরিণতির মুখোমুখি হবে ‘যা তারা তাদের ইতিহাসে কখনও দেখেনি। 

কার হাতে কত পারমাণবিক অস্ত্র

বিশ্বের প্রায় ৯০ শতাংশ পারমাণবিক অস্ত্রের মালিক রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে বেশি অস্ত্রের মালিক রাশিয়া। তার অস্ত্রাগারে রয়েছে পাঁচ হাজার ৯৭৭টি অস্ত্র। যা যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রাগারে থাকা অস্ত্রের চেয়ে ৫৫০টি বেশি। 

এ ছাড়া চীনের কাছে ৩৫০, ফ্রান্সের কাছে ২৯০, ব্রিটেনের কাছে ২২৫, পাকিস্তানের কাছে ১৬৫, ভারতের কাছে ১৬০ ও ইসরায়েলের কাছে রয়েছে ৯০টি পারমাণবিক বোমা।

এসব দেশগুলোর মধ্যে ইসরায়েল একমাত্র দেশ যারা পরমাণু অস্ত্র থাকার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করে না।

এসআইপিআরআই প্রথমবারের মতো জানিয়েছে, কিম জং উনের দেশ উত্তর কোরিয়া এখন ২০টি পরমাণু ওয়ারহেডের মালিক। ধারণা করা হয়, ৫০টির মতো ওয়ারহেড তৈরির রসদ আছে দেশটির।

সংস্থাটি বলছে, ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ১৩ হাজার ৮০টি পরমাণু ওয়ারহ্যাড ছিল। যা ২০২২ সালের জানুয়ারিতে কমে হয়েছে ১২ হাজার ৭০৫টি। আনুমানিক তিন হাজার ৭৩২টি ওয়ারহ্যাড মোতায়েন করে রাখা আছে, যার মধ্যে দুই হাজারের মতো রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের।