মহানবী (সা.) কে নিয়ে অবমাননাকর বক্তব্যের প্রতিবাদে মুসলিমদের বিক্ষোভের পরিকল্পনা বাদ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ভারতের বিভিন্ন মসজিদ এবং বিভিন্ন ইসলামি দলের বিশিষ্ট নেতারা।

দেশটির ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল বিজেপির দুই জ্যেষ্ঠ সদস্যের মহানবী (সা.) কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যের জেরে মুসলিমরা বিক্ষোভ করছিল। কিন্তু গত সপ্তাহে বিক্ষোভ সহিংস ঘটনায় রূপ নেয় এবং দুই কিশোর নিহত এবং ৩০ জন আহত হয়। এরপরই এই আহ্বান জানালেন ইসলামি নেতারা। 

ভারতের মুসলিম সংগঠন জামাত-ই-ইসলাম হিন্দের জ্যেষ্ঠ সদস্য মালিক আসলাম বলেন, যখন কেউ ইসলামকে ছোট করে কথা বলে তখন প্রতিটি মুসলিমের দায়িত্ব হলো একসঙ্গে প্রতিবাদ করা। কিন্তু একইভাবে শান্তি বজায় রাখাও জরুরি। সোমবার এই খবর দিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

চলতি মাসের শুরুতে বিজেপির দুই জ্যেষ্ঠ সদস্যের মহানবী (সা.) কে নিয়ে করা বক্তব্য মুসলিমদের বিক্ষুব্ধ করে। একটি বেসরকারি টেলিভিশনে অনুষ্ঠিত বিতর্ক অনুষ্ঠানে বিজেপির এক মুখপাত্র এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দলটির অপর এক মুখপাত্র মহানবী (সা.) কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেন। পরে এই দুই নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করে দলটি বলেছে, যেকোনো ধর্মের প্রতি অবমাননাকে দলটি নিন্দা জানায়। এই ঘটনায় দুটি মামলাও হয়েছে। তারপরও মুসলিমরা বিক্ষোভ করে আসছিলেন। 

এদিকে দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশ সন্দেহভাজন দাঙ্গাকারী হিসেবে অন্তত ৪০০ লোককে আটক করেছে এবং কিছু কিছু স্থানে কারফিউ জারি করেছে। বন্ধ করেছে ইন্টারনেট সেবা। 

অন্যদিকে রোববার উত্তরপ্রদেশ রাজ্য কর্তৃপক্ষ দাঙ্গা সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তির বাড়ি ভেঙে দিয়েছে। বাড়ি ভাঙচুরের এই ঘটনায় দেশটির সংবিধান বিশেষজ্ঞ এবং অধিকার কর্মীরা বিজেপি নেতৃত্বাধীন উত্তরপ্রদেশ সরকারের নিন্দা জানিয়েছে। 

মুসলিমরা এবং অধিকার কর্মীরা এই বাড়ি ভাঙচুরকে বিক্ষোভের শাস্তি হিসেবে দেখছেন। তবে রাজ্য সরকার কর্তৃপক্ষ বলছে, সরকারি জায়গায় বাড়িটি নির্মাণ করা হয়েছিল বলে তা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। 

উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের এক সহযোগী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, প্রতিবাদ বিক্ষোভ থেকে মুসলিমদের দূরে রাখতে আমরা বাড়ি ভাঙছি না। কারণ রাস্তায় নামার অধিকার তাদের আছে। 

এদিকে মহানবী (সা.) কে নিয়ে বিজেপির দুই নেতার বিতর্কিত মন্তব্যকে কেন্দ্র করে দেশে বিক্ষোভ এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডল থেকে নিন্দা এলেও এই নিয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেননি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।