ন্যাশনাল ব্যাংক কেলেঙ্কারির অভিযোগ অনুসন্ধান জোরদার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই কেলেঙ্কারির অভিযোগটি ছিল সিকদার গ্রুপের কর্ণধার ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত জয়নুল হক সিকদার ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি কমিশনে অভিযোগটি দায়ের করা হলে কমিশন প্রাথমিক অনুসন্ধান কাজ শুরু করে। এর আগে দীর্ঘদিন অনুসন্ধান বন্ধ ছিল। এক বছরেরও বেশি সময় পর অভিযোগটির অনুসন্ধানে গতি এসেছে। দুদক সূত্রে এই খবর জানা গেছে।

সূত্র জানায়, অভিযোগ সংক্রান্ত বিভিন্ন নথিপত্র চেয়ে রোববার বাংকের এমডির কাছে দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন স্বাক্ষরিত নোটিশ পাঠানো হয়েছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে ওইসব নথি সরবরাহের কথা বলা হয়েছে। একই দিনে সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত জয়নুল হক সিকদার ও তার পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতির তদন্ত প্রতিবেদনসহ অন্যন্য তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের বাংলাদেশ ফাইনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) মহাপরিচালকের কাছে আলাদা নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

জানা গেছে, দুদক প্রয়াত জয়নুল হক সিকদার ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, নামে-বেনামে জনগণের আমানতকৃত অর্থ লুটপাটসহ ঘুষের বিনিময়ে বিধিবহির্ভূতভাবে ঋণ দেওয়া ও ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ৩০ লাখ ডলার খরচ করার অভিযোগ অনুসন্ধান করছে। প্রয়াত জয়নুল হক সিকদারের পরিবারের সদস্যরা ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সদস্যের দায়িত্বে আছেন।

ব্যাংকের এমডির কাছে পাঠানো দুদকের নোটিশে বলা হয়, অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র ও কাগজপত্র পর্যালোচনা করা একান্ত প্রয়োজন। এর আগে অভিযোগ রেকর্ডপত্র চাওয়া হলে ব্যাংক থেকে সেগুলো সরবরাহ করা হয়নি। এই কারণে অনুসন্ধান কাজে বিঘ্ন হচ্ছে।

ব্যাংকের এমডির কাছে যেসব নথিপত্র চাওয়া হয়েছে সেগুলো হলো, ব্যাংকের ঢাকার নিমতলী শাখায় মেসার্স ইপসু ট্রেডিং কর্তৃক শাখায় চলতি হিসাব খোলার আবেদন, ছবিসহ নমুনা স্বাক্ষরকার্ড, কেওয়াইসি ফরম, চলতি হিসাব বিবরণী। ঢাকার কাওরানবাজারে ব্যাংকের নিজস্ব টাওয়ারে বিনিয়োগ, নির্মাণ সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র, টেন্ডার সংক্রান্ত নথিসহ অন্যান্য নথিপত্র। চট্টগ্রামে ব্যাংকের নিজস্ব টাওয়ার নির্মাণ, বিনিয়োগ সংক্রান্ত যাবতীয় নথি। এছাড়া প্রয়াত জয়নুল হক সিকদারের পরিবারের সদস্য রণ হক সিকার, রিক হক সিকদার, জন হক সিকদার, মমতাজুল হক, মনিকা সিকদার খান, নাসিম হক সিকদার ও সৈয়দ কামরুল ইসলাম ব্যাংক থেকে এ পর্যন্ত যেসব ক্রেডিট কার্ড নিয়েছেন সেগুলোসহ এ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য, নথি চাওয়া হয়েছে।

বিএফআইইউর কাছে পাঠানো নোটিশে প্রয়াত জয়নুল হক সিকদারের পরিবারের সদস্য রণ হক সিকার, রিক হক সিকদার, জন হক সিকদার, মমতাজুল হক, মনিকা সিকদার খান, নাসিম হক সিকদার ও সৈয়দ কামরুল ইসলামের নামে ব্যাংক থেকে ইস্যু করা ক্রেডিট কার্ড সংক্রান্ত অনিয়ম, দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত করা হয়ে থাকলে ওই তদন্ত প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে।

এর আগে তাদের ক্রেডিট কার্ড নিয়ে কোনো তদন্ত না হয়ে থাকলে এ নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন কমিশনে পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে।