- আন্তর্জাতিক
- রুশ হামলার মধ্যে সেভেরোদোনেৎস্ক থেকে সেনাদের সরতে বলল কিয়েভ
রুশ হামলার মধ্যে সেভেরোদোনেৎস্ক থেকে সেনাদের সরতে বলল কিয়েভ

ইউক্রেনের লুহানস্ক শহরের সেভেরোদোনেৎস্ক বেশ অনেকদিন ধরেই রুশ হামলা প্রতিরোধ করছে। তবে লড়াই তীব্র হওয়ায় সেখান থেকে সেনাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কিয়েভ।
শীর্ষ আঞ্চলিক কর্মকর্তার বরাতে এ তথ্য জানায় বিবিসি।
পূর্বাঞ্চলের এ শহরে কয়েক সপ্তাহ ধরে বোমা হামলা চালাচ্ছে রুশ সেনারা। তারা এ অঞ্চলের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু এখনও তারা তা পারেনি।
এদিকে সেভেরোদোনেৎস্ক থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার সিদ্ধান্তের কারণে লিসিচানস্ক ছাড়া পুরো লুহানস্কের নিয়ন্ত্রণ রাশিয়ার হাতে চলে যাবে।
পূর্ব ইউক্রেনে রুশ ভাষী অঞ্চল লুহানস্ক। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে এ অঞ্চল নিয়ন্ত্রণে নেওয়া অন্যতম লক্ষ্য। আর দোনেৎস্ক অঞ্চল মিলে পুরো অঞ্চল দোনবাস হিসেবে পরিচিত। এখানকার বিশাল শিল্পাঞ্চল ২০১৪ সাল থেকে রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল।
রুশ প্রেসিডেন্ট দাবি করেছেন, দোনবাসে রুশ ভাষীরা গণহত্যার শিকার—ইউক্রেনে আগ্রাসনের এটি অন্যতম কারণ হিসেবে দেখানো হয়।
অন্যদিকে ইউক্রেনের অভিযোগ, ইউক্রেনীয়দের ওপর বোমা ও গোলা বর্ষণের মাধ্যমে মস্কো গণহত্যা চালাচ্ছে।
এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা মলদোভা ও ইউক্রেনকে জোটটির সদস্যপ্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ায় ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে রাশিয়া। দেশটি বলছে, এ পদক্ষেপের পরিণতি হবে নেতিবাচক।
সেভেরোদোনেৎস্কের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি
রুশ সেনাদের হামলায় সেভেরোদোনেৎস্ক শহরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শহরটিকে ইউক্রেন নিয়ন্ত্রিত শহর থেকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য সব সেতু ধ্বংস করে ফেলা হয়। এমন পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের সেনা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত সব দিক থেকে অবরুদ্ধ হওয়া হয়তো এড়ানো যাবে।
লুহানস্কের গভর্নর সের্হি হাইদাই বলেন, প্রতিরোধ অব্যাহত রাখা এবং নিজ অবস্থানে অনড় থাকার এখন কোনো অর্থ নেই। আমাদের সেনাদের নতুন জায়গায় সরে আসার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং সেখান থেকে কার্যক্রম চলবে।
এদিকে ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে শহরের অধিকাংশ অবকাঠামো। ৯০ শতাংশের বেশি ঘরবাড়িতে গোলাবর্ষণ করা হয়েছে, যার মধ্যে ৮০ শতাংশের বেশি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সেভেরোদোনেৎস্ক জেলার প্রধান রোমান ভ্লাশেঙ্কো শুক্রবার বলেন, আমাদের সেনারা এখনও শহরে রয়েছে। তাদের সরিয়ে নিতে একটু সময় লাগবে।
লড়াইয়ের এ পর্যায়ে ধারণা করা হচ্ছে এখনও শহরে শত শত মানুষ আটকে আছেন। যাদের অনেকেই আজত কেমিক্যাল প্ল্যান্টে আশ্রয় নিয়েছেন। যুদ্ধের আগে শহরটির জনসংখ্যা ছিল প্রায় লাখের মতো।
সাম্প্রতিক সময়ে সেভেরোদোনেৎস্ক ও লিসিচানস্কে সাফল্য পেয়েছে রুশ সেনারা। তবে লিসিচানস্ক দখল সহজ হবে না বলে মনে করেন সের্হি হাইদাই।
তিনি বলেন, রাশিয়ার জন্য লিসিচানস্ক নিয়ন্ত্রণে নেওয়া ‘খুবই কঠিন’ হবে। কেননা, পাহাড়ি এ শহরে ‘অনেক প্রতিরক্ষামূলক অবস্থান’ রয়েছে।
মন্তব্য করুন