বেহাল সড়ক দেখার কেউ নেই, সংস্কারে নামলেন গ্রামের যুবকেরা

জনপ্রতিনিধিরা দৃষ্টি না দেওয়ায় অবশেষে নিজেদের গ্রামের ভেতরের রাস্তা সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে উল্লাপাড়া উপজেলার বেতবাড়ি গ্রামের একদল যুবক। শুক্রবার সকাল থেকে টুপড়ি কোদাল নিয়ে স্বেচ্ছায় বেহাল রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু করেন তারা। পঞ্চক্রোশী ইউনিয়নের বেতকান্দি-বেতবাড়ি সড়কের বেতবাড়ি গ্রামের ভেতরের প্রায় এক কিলোমিটার অংশ খানাখন্দ ও পানি-কাদায় পূর্ণ থাকায় রাস্তাটি অনেক দিন ধরেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। পানি জমে থাকা রাস্তাটিতে শিশু শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করতে গিয়ে প্রায়ই বই-খাতাসহ ভিজে বাড়ি ফিরে। বর্ষা মৌসুমে রাস্তাটি আরও নাজুক হয়ে পড়ে।

বেতবাড়ি গ্রামের যুবক রুহুল আমিন, খলিল মিয়া, আব্দুর রহিম ও নাসিম উদ্দিন জানান, পঞ্চক্রোশী ইউনিয়ন পরিষদের বেতকান্দি-বেতবাড়ি রাস্তা দিয়ে বেতবাড়ি গ্রামসহ পাশের বেতকান্দি, রামকান্তপুর ও চরসাতবাড়িয়া গ্রামের মানুষ প্রতিদিন পঞ্চক্রোশী ইউনিয়ন পরিষদ, উল্লাপাড়া উপজেলা সদর, সলপ রেলওয়ে স্টেশন, উল্লাপাড়া সাব রেজিস্ট্রি অফিস ও কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে থাকে। দুই কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তার বেতবাড়ি গ্রামের ভেতরের প্রায় এক কিলোমিটার অংশ তিন বছর ধরে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তারা রাস্তাটি সংস্কারের জন্য একাধিকবার পঞ্চক্রোশী ইউনিয়ন পরিষদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। স্থানীয় মেম্বরদের কাছেও রাস্তা সংস্কারের অনুরোধ জানিয়েছেন। কিন্তু তাতেও সমাধান হয়নি। মানুষের চলাচলের দুর্ভোগ নিরসনের জন্য ২০-২৫ জন যুবক মিলে নিজেরাই রাস্তা সংস্কারের কাজে নেমে পড়েন। তিনটি ভাগে ভাগ হয়ে যুবকেরা সংস্কার কাজ করছেন। একটি অংশ পার্শ্ববর্তী নদীর পাড় থেকে বালু ও মাটি নিয়ে আসছেন। দলের অপর দু'টি অংশ দুই পাশ থেকে টুপড়ি কোদাল নিয়ে রাস্তা সংস্কারের কাজ করছেন। ৩-৪ দিন কাজ করলে রাস্তাটি আপাতত চলাচলের উপযোগী হবে বলে মনে করেন তারা।

সংস্কার কাজে যুক্ত আব্দুল আলীম জানান, তিনি স্বেচ্ছায় রাস্তা সংস্কারের প্রস্তাব দিলে গ্রামের ছাত্র ও যুবকেরা আন্তরিকভাবে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। শুক্রবার থেকে আমরা সংস্কার কাজ শুরু করেছি। আশা করছি, মানুষের চলাচলের দুর্ভোগ আপাতত ঘুচবে। তিনি এ কাজে পঞ্চক্রোশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সহযোগিতা চান।

এ বিষয়ে পঞ্চক্রোশী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম ফিরোজ বলেন, এর আগে রাস্তাটি সংস্কার করা হয়েছিল কিন্তু রাস্তার এক পাশে খাল থাকায় বর্ষায় বৃষ্টিতে মাটি ধুয়ে মুছে গেছে। রাস্তাটি পাইলিং করে পাকা করা না হলে জনদুর্ভোগ দূর করা যাবে না। চলতি অর্থবছরে তিনি ওই রাস্তাটি পাকা করার উদ্যোগ নেবেন।