- আন্তর্জাতিক
- ব্যাংক বাঁচানোর গবেষণার স্বীকৃতি
ব্যাংক বাঁচানোর গবেষণার স্বীকৃতি

'ব্যাংক এবং অর্থনৈতিক সংকট' নিয়ে গবেষণার স্বীকৃতিস্বরূপ এ বছর অর্থনীতিতে নোবেল পেয়েছেন তিন মার্কিনি। গতকাল সোমবার রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস বিজয়ী হিসেবে বেন এস বার্নানকে, ডগলাস ডব্লিউ ডায়মন্ড ও ফিলিপ এইচ ডিবভিগের নাম ঘোষণা করে। অর্থনীতিতে, বিশেষ করে অর্থনৈতিক সংকটকালে ব্যাংকের গুরুত্ব কতটুকু- গবেষণায় তাঁরা তা দেখিয়েছেন।
ব্যাংকের দেউলিয়াত্ব ঠেকানো কতটা গুরুত্বপূর্ণ- সেটাও গবেষণায় তুলে এনেছেন যুক্তরাষ্ট্রের এ তিন অর্থনীতিবিদ। নোবেল কমিটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান বার্নানকে, শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ডায়মন্ড ও ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ডিবভিগ ১৯৮০-এর দশকে তাঁদের গবেষণা শুরু করেন। আর্থিক বাজার নিয়ন্ত্রণ ও অর্থনৈতিক সংকটের ক্ষেত্রে তাঁদের গবেষণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এ তিন অর্থনীতিবিদের গবেষণায় ব্যাংক ও সরকারের মধ্যে সম্পর্কের বিষয়টি গভীরভাবে বিশ্নেষণ করা হয়েছে। এ তিন অর্থনীতিবিদ সংকটের সময় ব্যাংকব্যবস্থা কীভাবে সুরক্ষিত রাখতে হয়- তা নিয়ে গবেষণালব্ধ ফল তুলে ধরেছেন। ব্যাংক সংকটে পড়লে কীভাবে আর্থিক সংকট ঘনীভূত হয়, সেটাও দেখিয়েছেন।
ডায়মন্ড ও ডিবভিগ দেখিয়েছেন, ব্যাংক মূলত সঞ্চয়কারী ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করে। তাঁরা সঞ্চয়কারীদের যেভাবে সঞ্চয় ভাঙার সুযোগ দেয়, তেমনি ঋণ গ্রহণকারীদেরও ঋণ দেয়। কিন্তু উভয়পক্ষকে এভাবে সেবা দিতে গিয়ে ব্যাংক এক ধরনের অনিশ্চয়তায় পড়ে। গুজব সৃষ্টি হয়, ব্যাংক এ কাজ করতে গিয়ে দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে। বিপুলসংখ্যক সঞ্চয়কারী একসঙ্গে সঞ্চয় ভাঙার জন্য যখন ব্যাংকে যান, তখন এ গুজব বাস্তবতার মুখ দেখার কাছাকাছি পর্যায়ে চলে যায়। বিপজ্জনক এ পরিস্থিতি এড়াতে সরকার উদ্ধারকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারে। সরকার আমানতের বীমা দিয়ে ব্যাংকের এ সংকটে উদ্ধারকারীর ভূমিকায় আসতে পারে।
অর্থনীতিবিদ ডায়মন্ড মনে করেন, ঋণ যাতে ভালো বিনিয়োগে ব্যবহূত হয়, তা নিশ্চিত করাও ব্যাংকের কাজ। অর্থনীতিবিদ বেন বার্নানকে ১৯৩০-এর অর্থনৈতিক মন্দা 'গ্রেট ডিপ্রেশন'-এর বিশ্নেষণ তুলে ধরেন। এটাকে আধুনিক মানুষের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক মন্দা বলে মনে করা হয়।
অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার ঘোষণার মধ্য দিয়ে এ বছরের নোবেল মৌসুম শেষ হলো। পুরস্কারের অর্থমূল্য বাবদ এ তিন অর্থনীতিবিদ পাবেন ১ কোটি সুইডিশ ক্রোনার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯ কোটি ১৩ লাখ ৮৯ হাজার ৭৬ টাকা)। চিকিৎসায় নোবেলের মধ্য দিয়ে এবারের নোবেল পুরস্কার ঘোষণার পর্ব শুরু হয়। আগামী ১০ ডিসেম্বর আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকীতে সুইডেনের স্টকহোমে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। করোনার কারণে গত দুই বছর ভার্চুয়ালি এ আনুষ্ঠানিকতা হয়েছিল।
মন্তব্য করুন