কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগে মার্কিন কূটনীতিককে তলব

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। ফাইল ছবি
কলকাতা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০২৪ | ১৯:০৪ | আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২৪ | ১৯:২৬
নির্বাচনের সময় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তার নিয়ে আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে রয়েছে নয়াদিল্লি। জার্মানির পর কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তার নিয়ে এবার মুখ খুলেছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা জানায়, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তারের ঘটনার প্রতি নজর রাখা হচ্ছে। এমন ঘটনায় বুধবার দিল্লিতে নিযুক্ত শীর্ষ মার্কিন কূটনীতিককে ডেকে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত।
বুধবার ভরতে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি চিফ অব মিশনের গ্লোরিয়া বারবেনাকে দিল্লির সাউথ ব্লকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়। প্রায় ৪০ মিনিট পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ছিলেন বারবেনা। তবে ওই বৈঠকে কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তা প্রকাশ করা হয়নি।
কেজরিওয়ালের প্রসঙ্গে রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল যাতে সময়-মতো ন্যায্য ও স্বচ্ছ আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যান, সেটাই কাম্য।
তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায় ভারত সরকার এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়ে স্পষ্ট হস্তক্ষেপ’ বলে চিহ্নিত করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, আমরা এই ধরনের মন্তব্যকে আমাদের বিচার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ এবং আমাদের বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করার মতো করে দেখি’।
মন্ত্রণালয় আরও জানায়, পক্ষপাতদুষ্ট অনুমানগুলো সবচেয়ে অযৌক্তিক। রাষ্ট্রগুলো একে অন্যের সার্বভৌমত্ব এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোর প্রতি সম্মান দেখাবে, এটাই কূটনীতিতে আশা করা হয়। বন্ধুত্বপূর্ণ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ক্ষেত্রে এই দায়িত্বটা আরও বেশি। এর অন্যথা হলে অস্বাস্থ্যকর উদাহরণ তৈরি হয়ে যেতে পারে।
একই সঙ্গে ভারতের আইনি ব্যবস্থাকে অপবাদ দেওয়া সম্পূর্ণ অনাকাঙ্ক্ষিত বলেও ওই বিবৃতিতে জানিয়েছে ভারত।
এর আগে কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তারি প্রসঙ্গে বিবৃতি জারি করে জার্মানি জানিয়েছিল, তারা আশা করছে, ভারত সরকার এই ব্যাপারে বিচারবিভাগীয় স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক রীতিনীতি মেনে পদক্ষেপ করবে। আপাদ দৃষ্টিতে জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এমন প্রতিক্রিয়া সাদামাটা মনে হলেও কূটনীতিতে অতিসাধারণ কথা গভীর অর্থবহন করে।
শনিবার নয়াদিল্লিতে কর্মরত জামার্নির দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশনকে দিল্লির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে নিয়ে ওই মন্তব্যের জন্য তীব্র ভৎসর্না করা হয়। এসময় বলা হয়, ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর চেষ্টা নয়াদিল্লি কোনো ভাবেই বরদাস্ত করবে না। আমরা এটাকে আমাদের বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতার ওপর প্রশ্নচিহ্ন হিসেবেই দেখছি। এরকম একপেশে অনুমান করে নেওয়া পুরোপুরিভাবে অনাকাঙ্ক্ষিত।
তবে এবারই প্রথম নয় সম্প্রতি সিএএ ইস্যুতেও সংশয় প্রকাশ করে বিবৃতি জারি করেছিল মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মুখ খুলেছিল ভারতের সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়েও। তখনও কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল ভারত। সতর্ক করেছিল অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক না গলাতে।
কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের অভ্যন্তরীণ দুটি বিষয়ে অল্প দিনের ব্যবধানে দুটি বন্ধু প্রতিম দেশের এমন প্রতিক্রিয়া দিল্লির জন্য বেশ অস্বস্তিকর।
- বিষয় :
- দিল্লি
- যুক্তরাষ্ট্র
- নিন্দা
- প্রতিবাদ
- কূটনীতিক
- মুখ্যমন্ত্রী