বিপিএলের কারণে নারী বিশ্বকাপ দলের ওপর ফোকাসটা সেভাবে পড়েনি। তাই অফিসিয়াল ফটোসেশনের পর মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের ভিআইপি স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে নিগার সুলতানারা যে সেলফি তুললেন, সেটাই হয়ে থাকল বিশ্বকাপ স্কোয়াডের ট্রেডমার্ক। ১০ থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠেয় টি২০ বিশ্বকাপে মেয়েরা ভালো করলে স্মৃতির অ্যালবাম থেকে এই ছবিটি বের করে দেখতে পারবেন ক্রিকেট সংশ্নিষ্টরা।

যেমন নীরবে-নিভৃতে বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়া অনূর্ধ্ব-১৯ নারী দল ফোকাস কেড়ে নিয়েছে বিশ্বকাপে একের পর এক ম্যাচ জিতে। এই তরুণীদের পারফরম্যান্স নিশ্চয়ই উজ্জীবিত করবে নিগার সুলতানাদেরও। বড়দের টি২০ বিশ্বকাপে ভালো করার লক্ষ্য নিয়েই তো গতকাল দক্ষিণ আফ্রিকার উদ্দেশে দেশ ছেড়েছেন তারা।

বাংলাদেশ টি২০ বিশ্বকাপ খেলছে ২০১৪ সাল থেকে। দেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে ভালোই করেছিল। যদিও পরে আর সেভাবে ভালো করতে পারেনি। এবারের দলটা অনেক বেশি পরিণত। টি২০ বিশ্বকাপ বাছাই টুর্নামেন্ট চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আবুধাবিতে। নিউজিল্যান্ডে ওয়ানডে এবং টি২০ সিরিজ খেলে এসেছে। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ দল থেকেও তিনজন- মারুফা আক্তার, দিশা বিশ্বাস, স্বর্ণা আক্তার নারী মূল বিশ্বকাপেও খেলবেন। দিলারা আক্তারও সুযোগ পেয়েছিলেন মূল বিশ্বকাপ স্কোয়াডে। চোটের কারণে বড়দের বিশ্বকাপ খেলা হচ্ছে না তাঁর। অনূর্ধ্ব-১৯ টি২০ বিশ্বকাপে পরের ম্যাচ খেলেই চোট পুনর্বাসন করবেন তিনি। দিলারার জায়গায় নেওয়া হয়েছে ফারজানা হক পিংকিকে। স্ট্যান্ডবাই তালিকায় ছিলেন তিনি।

নিগার সুলতানা মনে করেন, মারুফারাই হতে পারেন বিশ্বকাপে তুরুপের তাস, 'আমাদের থেকে তারা (অনূর্ধ্ব-১৯) এখন ভালো ছন্দে আছে। মারুফাকে দেখেছি, ধারাবাহিকভাবে ভালো বল করতে, এর আগে নিউজিল্যান্ডেও ভালো পারফর্ম করেছে। এমনকি দিশাও ভালো করছে। যাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, তাদের মধ্যে স্বর্ণা তো বরাবরই ভালো ব্যাটিং করে আসছে। এতে আমাদের দল অনেক উপকৃত হবে। যেহেতু তারা এখন ওখানে (দক্ষিণ আফ্রিকা) আছে, তারা যদি একাদশে খেলতে পারে, সুযোগ পায়, তাহলে দলের জন্য অনেক সুবিধা হবে। যেহেতু উনিশের মেয়েরা ভালো করছে, তাদের কাছ থেকে আমাদের অনুপ্রেরণা নেওয়া, ভালো হবে।'

১০ দলের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ খেলবে 'এ' গ্রুপ থেকে। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের মতো কঠিন প্রতিপক্ষকে মোকাবিলা করতে হবে নিগার সুলতানাদের। ক্রিকেট সংস্কৃতিতে এ দুটি দলই এগিয়ে। বিশেষ করে টি২০ ক্রিকেটটা বেশি ভালো খেলে তারা। বাংলাদেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা আর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। অস্ট্রেলিয়া বা নিউজিল্যান্ডের মতো অতটা শক্তিশালী নয় তারা। তাই এবারের টি২০ বিশ্বকাপে ম্যাচ জয়ের আশা করতেই পারে বাংলাদেশ।

এ ছাড়া নিগাররা একটা লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন, ভবিষ্যতে টি২০ বিশ্বকাপের বাছাই টুর্নামেন্টে খেলতে চান না। তেমন কিছু করতে হলে একাধিক ম্যাচ জিতে পেয়েন্ট টেবিলের ওপরের দিকে থাকতে হবে নারীদের। এবারের টুর্নামেন্ট ১০ ফেব্রুয়ারি মাঠে গড়ালেও বাংলাদেশের বিশ্বকাপ শুরু ১২ ফেব্রুয়ারি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। জয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করা গেলে ১৪ ফেব্রুয়ারি লড়াইটা জমাতে পারবেন জাহানারা আলমরা।