লক্ষ্মীপুরে স্ত্রী রিনা বেগমসহ তার প্রেমিক ইউসুফকে হত্যার দায়ে ইব্রাহিম খলিল (৪০) নামে এক ব্যক্তিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অপর আরেকটি মামলায় মোশাররফ হোসেন নামে এক তহসিলদারকে কুপিয়ে হত্যার ২৫ বছর পর হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুই আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত।

বুধবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম পৃথক এ দুই মামলার রায় দেন।

আদালত ও মামলার এজাহার সূত্র জানায়,  জেলার রামগতি চরলক্ষী গ্রামের ইব্রাহিমের স্ত্রী রিনার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে ইউসুফের সঙ্গে। ২০১৭ সালের ৩ জুন ইফতারের সময় ফেনী থেকে বাড়িতে এসে ইব্রাহীম তার স্ত্রী রিনা ও ইউসুফকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ইব্রাহিম দু'জনকেই ঘরে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। এসময় ইউছুফের পেটে আঘাত করায় নাড়িভুড়ি বের হয়ে যায়। তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়। এ ঘটনায় তাছলিমা বেগম নামে একজন বাদী হয়ে রামগতি থানায় মামলা করেন। অন্যদিকে ওই বছরের ৬ জুন চিকিৎসাধীন অবস্থায় নোয়াখালী হাসপাতালে রিনা মারা যায়। পরে সুধারাম থানায় নিহতের মা জানু বেগম মামলা করেন। একই বছরের ১২ নভেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রামগতি থানা পুলিশ আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেন। রায়ের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।

এদিকে, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে রামগতির চর সেকান্দর গ্রামের বাসিন্দা মৃত দারা বক্স মাঝির দুই ছেলে আবদুল গোফরান ও মোশাররফ হোসেন তহসিলদারের সাথে বিরোধ দেখা দেয়।  এরই জের ধরে ১৯৯৮ সালের ১৭ জুলাই সকালের দিকে আবদুল গোফরান ও তার ছেলে মো. ইদ্রিস ওরফে কালাসহ তার অন্য ছেলেরা মিলে মোশাররফ তহসিলদারকে এলোপাতারি কুপিয়ে জখম করে। পরে তাকে উদ্ধার করে জেলা শহরের আধুনিক হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা মোশাররফকে মৃত ঘোষণা করে। এ ঘটনায় ওইদিন মোশাররফ তহসিলদারের ছেলে আবুল হাসান চৌধুরী ওরফে রাশেদুল আলম বাদী হয়ে ১২ জনের বিরুদ্ধে রামগতি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

১৯৯৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর আদালতে এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেন তৎকালীন রামগতি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সালাহ উদ্দিন আল মাহমুদ। এতে মামলার ১ নম্বর আসামি মো. ইদ্রিস ওরফে কালাকে প্রধান অভিযুক্ত করে ৬ জনের নামে অভিযোগপত্র দেন তিনি।

লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান,দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন,রামগতি চর সেকান্দর গ্রামের আবদুল গোফরানের ছেলে মো. ইদ্রিস ওরফে কালা ও এবাদ উল্যার ছেলে মো. চৌধুরী বকত। রায়ে ওই মামালার অপর ৭ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়।