- আন্তর্জাতিক
- আদানির পতনে গণতন্ত্রের নবজাগরণ হবে ভারতে
মার্কিন ধনকুবের সরোসের মন্তব্য
আদানির পতনে গণতন্ত্রের নবজাগরণ হবে ভারতে

মানবতাবাদী মার্কিন ধনকুবের জর্জ সরোস বলেছেন, ভারতের আদানি গোষ্ঠী এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভাগ্য একই সুতোয় গাঁথা। আদানি সাম্রাজ্যের পতনে মোদি দুর্বল হয়ে পড়বেন। এতে ভারতে গণতন্ত্রের নবজাগরণ হবে। ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি অবশ্য এ বক্তব্যে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এবং একে সরকার পরিবর্তনে বিদেশি হস্তক্ষেপ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। খবর রয়টার্স ও ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের।
বৃহস্পতিবার মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে বক্তৃতায় ৯২ বছর বয়সী সরোস বলেন, মোদি এবং ধনকুবের গৌতম আদানি ঘনিষ্ঠ মিত্র। আদানির পতনে ভারতের ফেডারেল সরকারের ওপর মোদির নিয়ন্ত্রণ উল্লেখযোগ্যভাবে দুর্বল হবে এবং অতি প্রয়োজনীয় প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের দ্বার উন্মুক্ত করবে।
গত মাসের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রের হিনডেনবার্গ রিসার্চ আদানির শেয়ার জালিয়াতিসহ নানা অনিয়ম নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশের পর শেয়ারবাজারে তারা ১২০ বিলিয়ন ডলার হারিয়েছে। বিরোধীরা বলছেন, এই গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা গৌতম আদানির সঙ্গে মোদির দীর্ঘদিনের সম্পর্ক রয়েছে।
মোদির আনুকূল্যে আদানির অস্বাভাবিক উত্থান হয়েছে। গত পাঁচ বছরে আদানির সম্পদ ২৫০০ শতাংশ বেড়েছে।
উদার গণতন্ত্রের আদর্শ ধারক হিসেবে খ্যাত সরোস বলেন, আদানির বিরুদ্ধে শেয়ার জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে এবং তার শেয়ার তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে। মোদি এই বিষয়ে নীরব। তবে তাকে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের এবং সংসদে প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।
গণতান্ত্রিক শাসনের প্রচারের জন্য ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সরোস বলেন, মোদি গণতন্ত্রী নন। মুসলিমদের বিরুদ্ধে সহিংসতা উস্কানি দেওয়া তাঁর উত্থানের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছিল।
বিজেপি নেত্রী ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির অভিযোগ, ভারত বিরোধী কাজ করেছেন আমেরিকার প্রবীণ শিল্পপতি। তিনি ভারতের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে আঘাত করেছেন। এটি শুধু ভারতের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা নয়। তিনি কার্যত ভারতে সরকার পরিবর্তনের কথা বলেন। ভারত সবসময় বিদেশি শক্তিকে পরাজিত করেছে এবং ভবিষ্যতেও তাদের পরাজিত করবে।
ভাষণে সরোস আরও বলেন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান তুর্কি অর্থনীতিকে অব্যবস্থাপনায় ফেলেছেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভদ্মাদিমির পুতিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা চীনে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ক্ষতি করবে। জিনপিং আজীবন ক্ষমতায় থাকবেন না। তাঁর মেয়াদে চীন প্রভাবশালী সামরিক ও রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হবে না।
সরোস তাঁর স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনে ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশনে প্রায় ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি তহবিল দিয়েছেন। নিজের সারাজীবনের মোট সম্পদের বেশিরভাগই দান করে দিয়েছেন তিনি। ক্ষুধা ও দারিদ্র্য দূরীকরণ, সর্বশিক্ষার মতো খাতে হাজার হাজার কোটি টাকা বিলিয়ে দিয়েছেন এই ধনকুবের। ২০২০ সালে সরোস মোদির বিরুদ্ধে 'হিন্দু জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্র' তৈরি করার এবং মুসলমানদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ করেন। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্পেরও কট্টর সমালোচক তিনি।
মন্তব্য করুন