প্রায় তিন বছর পর বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী সব শ্রেণির যাত্রীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে দর্শনা (চুয়াডাঙ্গা)-গেদে (পশ্চিমবঙ্গ) আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট। এখন থেকে এই ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে দুই দেশের নাগরিকরা গমনাগমন করতে পারবেন। 

গতকাল রোববার থেকে দর্শনা-গেদে স্থলপথে সব শ্রেণির যাত্রীর জন্য ভিসা ইস্যু করা হচ্ছে। এরপর থেকে আগের মতোই বাংলাদেশি যাত্রীরা চলাচল করতে পারছেন।

গেদে স্থলবন্দরের কর্মকর্তা অজয় নারায়ণ রায় জানান, ভারত সরকারের পক্ষে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি আমাদের কাছে একটা নোটিশ এসেছে। চেকপোস্ট চালু হওয়ায় সাধারণের ভোগান্তি কমবে। পাশাপাশি এখানে কর্মরত বিভিন্ন পেশার মানুষের আয়ের পথ প্রশস্ত হবে। 

চেকপোস্টের লাইসেন্সধারী রেলের কুলি সনজিৎ রায় জানান, আমাদের কাজ হচ্ছে যাত্রীদের মালামাল বহন করা। গত তিন বছর চেকপোস্ট বন্ধ থাকার কারণে সেভাবে রোজগার নেই। এখন এই রুট চালু হওয়ায় আশা করছি ফের রোজগার হবে। 

গেদে-দর্শনা দিয়ে বাংলাদেশের স্থানীয় মানুষদের ভারতে বিশেষ করে কলকাতা ভ্রমণ সহজ। খরচও কম। মহিন আব্রাহাম নামে এক বাংলাদেশি এক যাত্রী বলেন, এখান দিয়ে ভিসা বন্ধ থাকার কারণে আমাদের বিমান বা অন্য পথে যেতে হতো। সেক্ষেত্রে খরচটা অনেক বেশি হয়ে যেত। কিন্তু এই বর্ডার চালু হওয়ায় অনেক কম খরচে যেতে পারছি। তাছাড়া যাত্রাপথে কোনো বিরতি নেই।

তাপস তরফদার নামে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, এই তিন বছর পরিবার নিয়ে কষ্টে জীবনযাপন করছি। চেক পোস্ট চালু হওয়া যাত্রীদের পাশাপাশি আমাদের জন্যও একটি ভালো খবর। 

মানি এক্সচেঞ্জে কর্মরত দীনবন্ধু মহলদার জানান, বাংলাদেশি যাত্রীদের এই স্থলবন্দর দিয়ে যাতায়াত বন্ধ থাকার ফলে গত প্রায় ৩৫ মাস আমি এবং আমাদের সহকর্মীদের বেকার অবস্থায় ছিলাম। সত্যি এটা খুশির খবর। আমরা হয়তো আবার সুদিনের দেখা পাব।

বৈশ্বিক মহামারির করোনার কারণে ২০২০ সালের ২৬ মার্চ দর্শনা-গেদে স্থলপথে সব ধরনের যাত্রী চলাচল স্থগিত করা হয়। ভারতে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনতে ২০২১ সালের ১৭ মে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়। একই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে মেডিকেল ও বিজনেস ভিসা নিয়ে যাত্রী চলাচল শুরু হলেও ৫ ডিসেম্বর তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। গত বছরের ২৯ মে দর্শনা-গেদে রেলপথে মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন চালু হলেও স্থলপথের যাত্রীদের দুর্ভোগ থেকেই যায়। সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতির পর ভারতীয় পাসপোর্টধারী যাত্রীরা স্বাভাবিক আসা-যাওয়া করলেও বাংলাদেশ থেকে শুধু জ্যেষ্ঠ নাগরিক ও দীর্ঘমেয়াদি ভিসাধারীরা এই সুবিধা পেয়ে আসছিলেন।