- আন্তর্জাতিক
- আঞ্চলিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে নতুন জোট গড়তে চান মমতা-অখিলেশ
আঞ্চলিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে নতুন জোট গড়তে চান মমতা-অখিলেশ
জোট নিয়ে বিজেপির রসিকতা

পশ্চিমবঙ্গ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং উত্তর প্রদেশের বিরোধী দলনেতা অখিলেশ যাদবের বৈঠক। ছবি: সমকাল
২০২৪ সালে ভারতে লোকসভা নির্বাচন। নির্বাচনকে সামনে রেখে জোট গঠনের নানা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মূলত নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টিকে (বিজেপি) চ্যালেঞ্জ ছুঁড়তেই পশ্চিমবঙ্গ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং উত্তর প্রদেশের বিরোধী দলনেতা অখিলেশ যাদব নতুন জোট গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। এ জন্য বাম ও কংগ্রেসকে ছাড়াই শক্তিশালী আঞ্চলিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করতে চান তারা।
শুক্রবার (১৭ মার্চ) সন্ধ্যায় কালীঘাটের কার্যালয়ে এক ঘণ্টারও বেশি বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ও অখিলেশ যাদব। বৈঠকের পরে সমাজবাদী পার্টির পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে ভোটের আগে জোট গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস এবং সমাজবাদী পার্টি। তবে বৈঠকে নিশ্চিত করা যায়নি নির্বাচনে জয়ী হলে জোটের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন তা।
এদিকে মমতা-অখিলেশের বৈঠকের কার্যকারিতা নিয়ে রসিকতা করেছেন বিজেপি নেতারা।
জানা যায়, কলকাতায় চলছে সমাজবাদী পার্টির জাতীয় সম্মেলন। সেই সম্মেলনে যোগ দিতে গত বৃহস্পতিবার কলকাতা এসেছেন সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমো অখিলেশ যাদব। সম্মেলনের ফাঁকে শুক্রবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তিনি বৈঠকে বসেন। ওই বৈঠকে লোকসভা ভোটের আগে জোট গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সমাজবাদী পার্টির পশ্চিমবঙ্গের নেতা সাবেক সাংসদ ও সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি কিরণময় নন্দসহ আরও দুই নেতাকে নিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা বৈঠক করেন অখিলেশ যাদব। বৈঠকে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর অতিমাত্রায় সক্রিয়তা ও মোদী সরকারের জনবিরোধী নীতির প্রচার নিয়ে কথা হয় তাদের।
বৈঠক শেষে অখিলেশ যাদব বলেন, ‘দেশের গণতন্ত্র ও সংবিধান রক্ষা করতে আমরা একজোট হব। বাম এবং কংগ্রেসকে ঠিক করতে হবে তারা কি করবে। একটা উপায় বের করতে তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নিজেদের মতো চেষ্টা করছেন। তবে ২০২৪ সাল পর্যন্ত কোনো দলের এমন কোনো আচরণ করা উচিত নয়, যাতে ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির ক্ষতি হয়। তাদের উচিত ধর্মনিরপেক্ষ এবং বৃহৎ শক্তিকে সমর্থন করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেসকে বাদ দিয়েই একটি নতুন ফ্রন্ট গঠন করা হবে। আপনি এটাকে ফ্রন্ট বা জোট বলতে পারেন। কিন্তু নির্বাচনের আগে কিছু একটা হবেই হবে। কারণ সবাই পরিবর্তন চায়।’
তবে নতুন জোট নির্বাচনে জয়ী হলে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, তার বৈঠকে চূড়ান্ত হয়নি বলে জানান অখিলেশ। তিনি বলেন, নির্বাচনের পরে তা ঠিক করা হবে।
অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা অনুযায়ী তৃণমূল কংগ্রেস ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে একাই লড়াই করবে। তবে জাতীয় স্বার্থে আগামী দিনে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক হবে। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগামী সপ্তাহে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী এবং বিজু জনতা দলের প্রধান নবীন পট্টনায়কের সঙ্গে দেখা করবেন।
তিনি আরও বলেন, ‘দুই দলের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আমরা অন্য বিরোধী দলগুলোকে বিজেপি এবং কংগ্রেস থেকে সমদূরত্ব বজায় রাখার একটি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করব। আমরা বলছি না, যে আমরা তৃতীয় ফ্রন্ট গঠন করছি। তবে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করার শক্তি যাদের আছে, তেমন আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে কথা বলব ‘
টিএমসি নেতা আরও বলেন যে, কংগ্রেসকে বিরোধী দলগুলোর ‘বিগ বস’ মনে করা একটি ভুল ধারণা। কারণ বিজেপি দেখাতে চায় রাহুল গান্ধীই বিরোধী দলগুলোর মুখপাত্র। এতে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পক্ষে নির্বাচনে জয়লাভ করা সহজ হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোটের পরে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করা হবে বলে জানিয়েছেন।’
এদিকে আঞ্চলিক দলগুলোর জোট জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারবে না এমনটাই বলছেন বিজেপি নেতারা।
অখিলেশ যাদবকে কটাক্ষ করে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন ছাড়া ভোট করা আর বর ছাড়া বিয়ে করা একই বিষয়। একদিকে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদী, অন্যদিকে যদি কেউ না থাকেন তাহলে তো মুখ ছাড়া ভূত হয়ে ঘুরে বেড়াবে সবাই।’
মন্তব্য করুন