- আন্তর্জাতিক
- মানবাধিকার নিয়ে মার্কিন প্রতিবেদনের নিন্দা বিশিষ্টজনের
মানবাধিকার নিয়ে মার্কিন প্রতিবেদনের নিন্দা বিশিষ্টজনের

বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের সমালোচনা ও নিন্দা জানিয়েছেন শতাধিক বিশিষ্টজন। বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ব্যানারে তাঁরা এ নিন্দা জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, যুদ্ধাপরাধী দল জামায়াত সম্পর্কে মার্কিন প্রতিবেদন শুধু অসত্য নয়, বাংলাদেশসহ গোটা উপমহাদেশে দলটি পরিচালিত জঙ্গি মৌলবাদী সন্ত্রাসকে ইন্ধন জোগাবে। জামায়াত একটি গণতন্ত্রবিরোধী দল, যারা সংবিধান মানে না। উচ্চ আদালত ২০১৩ সালে দলটির নিবন্ধন বাতিল করেছে। যদিও সরকার জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করেনি। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিভিন্ন রায়ে দলটিকে ’৭১-এর গণহত্যার জন্য দায়ী করা হয়েছে। অথচ মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জামায়াতকে বাংলাদেশের বৃহত্তম ইসলামী দল আখ্যায়িত করে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় ওকালতি করেছে।
বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক বিচারপতি শামসুল হুদা, শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, অধ্যাপক অনুপম সেন, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, সমাজকর্মী মালেকা খান, শিল্পী হাশেম খান, শিল্পী রফিকুন নবী, অধ্যাপিকা পান্না কায়সার, অধ্যাপিকা মাহফুজা খানম, জননেতা ঊষাতন তালুকদার, কথাশিল্পী সেলিনা হোসেন, চলচ্চিত্র নির্মাতা নাসির উদ্দীন ইউসুফ, অধ্যাপক ডা. কাজী কামরুজ্জামান, ক্যাপ্টেন (অব.) আলমগীর সাত্তার বীরপ্রতীক, ক্যাপ্টেন (অব.) সাহাবউদ্দিন আহমেদ বীরউত্তম, মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আবদুর রশীদ, অধ্যাপক ডা. আমজাদ হোসেন, ড. নূরন নবী, লেখক শাহরিয়ার কবির, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, সালমা হক, কলামিস্ট সৈয়দ মাহবুবুর রশিদ, শিক্ষাবিদ মমতাজ লতিফ, অধ্যাপক আবুল বারক আলভী, সমাজকর্মী কাজী মুকুল, অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, অধ্যাপক আয়েশ উদ্দিন, যাত্রাশিল্পী মিলন কান্তি দে, আবৃত্তিশিল্পী শওকত আলী, অধ্যাপক মেজবাহ কামাল, ডা. শেখ বাহারুল আলম, ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা, ডা. ইকবাল কবীর প্রমুখ।
বিবৃতিদাতারা বলেন, ৩১ বছর ধরে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার জন্য আমরা আন্দোলন করছি। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জনমত উপেক্ষা করে জামায়াততোষণ নীতিতে অবিচল থাকে, তা শুধু এ দেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাকে বিপন্ন করবে না, দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক নিরাপত্তাসহ পশ্চিমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও বিপদ ডেকে আনবে।
বিভিন্ন সময়ে জামায়াত সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের অতীত ভূমিকা তুলে ধরে তাঁরা বলেন, ২০১৮ সালে মার্কিন কংগ্রেসম্যান জিম ব্যাংক জামায়াত-শিবিরকে সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যা দিয়ে একটি প্রস্তাব জমা দেন, যেখানে তাদের বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিবরণ তুলে ধরে তিনি পররাষ্ট্র দপ্তর ও ইউএসএইডকে জামায়াত-শিবিরসহ তাদের সমমনাদের প্রশ্রয় না দিতে বলেন। এতে আরও বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে এবং ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছে। স্বাধীনতার মূল্য দিতে গিয়ে ৩০ লাখ মৃত্যু, ২ লাখ নারী ধর্ষণ এবং ১ কোটি মানুষের দেশান্তরিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে, যার অধিকাংশের সঙ্গে জামায়াত জড়িত।
জিম ব্যাংকের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম থিঙ্কট্যাঙ্ক ‘মিডলইস্ট ফোরাম’ বলেছে, জামায়াত একটি ভয়ংকর প্রভাবশালী গোষ্ঠী, যাদের সন্ত্রাসের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। বিএনপি জোটে থেকে এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রশ্রয় পেয়ে তারা এখনও তাদের আশ্রিত জঙ্গি সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে।
মন্তব্য করুন