বিরোধী দলীয় রাজনৈতিক নেতার পরিবারের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্কে জড়ানো যাবে না, এমনকি একসঙ্গে চা খাওয়া কিংবা বিরোধী দলীয় রাজনৈতিক নেতার বাড়িতে নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে যাওয়ার ক্ষেত্রেও দূরত্ব বজায় রাখা উচিত। শনিবার এমনই বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার সদস্য, পশ্চিমবঙ্গের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।

গত বৃহস্পতিবার নিজের সংসদীয় বিধানসভা আসনে একটি রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে আসেন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। সেখানেই মন্ত্রী বলেন ‘সিপিএম বীভৎস, ভয়ঙ্কর রাজনৈতিক দল। আমি ২০১১ সালে যে কথা বলেছিলাম এখনও সেটাই প্রযোজ্য। আমি অন্তত আমার ক্ষেত্রে এটা করি। সিপিএমের সঙ্গে চা খাই না, গল্প করি না।’

ক্ষমতার পালাবদলের পর রাজনৈতিক হিংসা রুখতে, ‘বদলা নয় বদল চাই’ স্লোগান তুলে ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতায় এসেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু মমতা সরকারের এক বছর পেরোতে না পেরোতেই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘বিরোধী দলের একেকজন বিষধর সাপের মতো। লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মারা উচিত।’ সেইসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, ‘সিপিএমের সঙ্গে কারও বৈবাহিক সম্পর্কে জড়ানো উচিত নয়, একসঙ্গে বসে চা খাওয়া উচিত নয়। এমনকি সিপিএমের কেউ যদি কোনও বিয়েবাড়িতেও নেমন্তন্ন খেতে যায় সেখানেও যাওয়া বয়কট করা উচিত।’ এই নিয়ে সে সময় শুরু হয় তীব্র রাজনৈতিক জলখোলা। 

এরপর পেরিয়ে গেছে একযুগ। কিন্তু জ্যোতিপ্রিয় আছে জ্যোতিপ্রিয়তেই। শনিবার ফের নিজের পুরনো স্লোগানের প্রসঙ্গ তোলেন জ্যোতিপ্রিয়। বলেন, ২০১১ সালের নভেম্বরে একটা স্লোগান দিয়েছিলাম, ‘সিপিএমের সঙ্গে চলব না। তার সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক তৈরি করব না। তারা কোনও বিয়েবাড়ি গেলে যাব না।’ সেটা আজও খুবই প্রযোজ্য। আমি সিপিএমের সঙ্গে চলার পক্ষপাতী নই। এরা ভয়ঙ্কর রাজনৈতিক দল।

এ নিয়ে অবশ্য উল্টো মত ব্যাক্ত করেছেন রাজ্যের নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তার কথায়, ‘একজন কাউন্সিলর, জনপ্রতিনিধি হিসাবে আমি মনে করি- সিপিএম পরিবারের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া আমার কাজ। কেউ প্রয়াত হলে শ্মশানযাত্রী হওয়া আমার মানবিক কর্তব্য।’