- আন্তর্জাতিক
- শুনানির জন্য অমর্ত্য সেনকে ১০ দিন সময় দিল বিশ্বভারতী
শুনানির জন্য অমর্ত্য সেনকে ১০ দিন সময় দিল বিশ্বভারতী

নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। ছবি : সংগৃহীত
বিশ্বভারতীর জমি দখল কাণ্ডে উচ্ছেদের হুমকি দিয়ে নোটিশ পাঠিয়ে তলব করা হয়েছিল নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে। গেলো ২৯ তারিখ সশরীরে বা তার প্রতিনিধিকে বিশ্বভারতীর সেন্ট্রাল অ্যাডমিশন বিল্ডিংয়ের কনফারেন্স হলে হাজির হতে বলা হয়েছিল ওই নোটিশে। সেই নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার আইনজীবী মারফত পাল্টা চিঠি দিয়ে বিশ্বভারতীর কাছে সময় চেয়ে নিয়েছিলেন অমর্ত্য সেন। কিন্তু চারমাসের বদলে মাত্র ১০ দিন সময় দিয়ে পাল্টা চিঠি পাঠিয়েছে বিশ্বভারতী।
অমর্ত্য সেনের আইনজীবী গোরাচাঁদ চক্রবর্তী বলেন, বিশ্বভারতীর জয়েন্ট রেজিস্ট্রার এবং এস্টেট অফিসার সম্প্রতি নোটিশ পাঠিয়ে জানতে চেয়েছেন প্রতীচীর অতিরিক্ত দখলকৃত জমি থেকে কেন অধ্যাপক সেন কে উচ্ছেদ করা হবে না। সেই নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা চার মাস অতিরিক্ত সময় চেয়েছিলাম। অধ্যাপক সেন এই মুহূর্তে দেশের বাইরে রয়েছেন। আর অনুপস্থিতিতে বিশেষ কারণবশত জমি সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কিছু নথি পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। তাই অতিরিক্ত চার মাস সময় চেয়ে নিয়েছিলাম। অধ্যাপক সেনের অনুপস্থিতির জেরে তৈরি হওয়া পরিস্থিতি বর্ণনা করে জয়েন্ট রেজিস্ট্রার এবং এস্টেট অফিসার দুজনকেই চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বুধবার শান্তিনিকেতনের প্রতীচীর নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে অমর্ত্য সেনের নামে। এই চিঠিকে শোকজ ও শুনানির জন্য মাত্র ১০ দিন মঞ্জুর করা হয়েছে। দশদিন মঞ্জুর করার পেছনে একাধিক যুক্তিও দেওয়া হয়েছে।
আইনজীবী গোরাচাঁদ চক্রবর্তী জানান, যেহেতু তিনি দেশের বাইরে রয়েছেন তাই এই সময়ের মধ্যে সব নথি নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। আমরা আবারও বিশ্বভারতী কে চিঠি দেবো।
প্রসঙ্গত, ২০০৬ সাল থেকেই নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের সঙ্গে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ ডেসিবল জমি নিয়ে টানাপড়েন চলছিল। কিছুদিন আগে এই অর্থনীতিবিদ শান্তিনিকেতনের প্রতীচীর বাড়িতে অবস্থান করার সময় তাঁকে অতি দ্রুত ১৩ ডেসিবল জায়গা খালি করার নোটিশ পাঠায় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। ওই নোটিশ ঘিরে শুরু হয় জোরাল বিতর্ক। বিতর্ক চরমে উঠলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে শান্তিনিকেতনে পৌঁছে অমর্ত্য সেনের হাতে তার জমির কাগজপত্র বুঝিয়ে দেন।
বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠায় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সহযোগী ছিলেন অমর্ত্য সেনের দাদু পণ্ডিত ক্ষিতিমোহন সেন। কবিগুরুর সময় থেকেই শান্তিনিকেতনের 'প্রতীচী' বাড়িতে বসবাস করছে সেন পরিবার। ১৯৪৩ সালে অমর্ত্য সেনের বাবা প্রয়াত আশুতোষ সেনের নামে ৯৯ বছরের জন্য এই জমি লিজ দেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি সেই লিজের ১.৩৮ একর জমির রেকর্ড আশুতোষ সেনের পরিবর্তে নিজের নাম নথিভুক্ত করার জন্য আবেদন করেছিলেন অমর্ত্য সেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর সম্প্রতি সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে অমর্ত্য সেনের নামে জমির রেকর্ড ট্রান্সফার করে দেয়।
মন্তব্য করুন