দেশে কোন সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ নেই। বিভিন্ন অঞ্চলে বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও তাদের ওপর পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসী হামলা অব্যাহত আছে বলে অভিযোগ করেছে দলটি। 

সোমবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করা হয়।

বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, দেশে কোন সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ নেই। সরকারীদল ছাড়া আর কারো রাজনীতি করার অধিকার নাই। ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী সরকার দেশ থেকে বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে ধ্বংস করে নিজেদের একচ্ছত্র আধিপত্য বজায় রাখতে রাষ্ট্রযন্ত্রসহ সর্বোচ্চ শক্তি নিয়োগ করেছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ৮ এপ্রিল দেশব্যাপী বিএনপি’র কেন্দ্র ঘোষিত শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী এবং বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানাসহ নেতাদের গাড়ি ভাঙচুর করে দুষ্কৃতকারীরা। খাগড়াছড়ি সদর উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি’র উদ্যোগে আয়োজিত ইফতার মাহফিলও পণ্ড করে দেওয়া হয়েছে। বিএনপির শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকনসহ সারাদেশে অসংখ্য নেতাকর্মীর ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। গ্রেপ্তার করা হয়েছে অগণিত নেতাকর্মীকে। এসব আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনায় আবারও প্রমাণিত হলো-বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকার দেশ থেকে বিরোধী দলের অস্তিত্ব ধ্বংস করতে এখন মরণকামড় দিতে শুরু করেছে।

প্রিন্স বলেন, নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতিতে দেশের মানুষ দিশেহারা। রমজান মাসেও মানুষ ঠিক মতো এক বেলা খেতে পাচ্ছে না। অর্ধেকের বেশী জনগোষ্ঠী ঋণ করে সঞ্চয় ভেঙ্গে দিনাতিপাত করছে। আর এসবের প্রতিবাদ করলেও মামলার ভয়। 

বিএনপির এই নেতা বলেন, বর্তমানে ভোটারবিহীন সরকার সত্য প্রকাশ ও সমালোচনা সহ্য করতেই পারে না। সরকারের অবৈধ কাজের সমালোচনা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলায় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে একের পর এক গণমাধ্যম। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় বিরোধী দলের মুখপত্র দৈনিক দিনকালের ডিক্লারেশন বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, বিএনপিকে নানাভাবে হয়রানী ও ক্ষতিগ্রস্ত করার ধারাবাহিক সরকারি মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবেই উল্লেখিত নেতাদের পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তার এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীদের দ্বারা আহত করা হয়েছে।

প্রিন্স জানান, চলমান গণআন্দোলনের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, আওয়ামী সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রতিবাদে এবং ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে আজ থেকে দেশব্যাপী বিভাগ ভিত্তিক ইউনিয়ন পর্যায়ে মানববন্ধন বা অবস্থান, প্রচারপত্র বিতরণ কর্মসূচি পালিত হবে। এই কর্মসূচি চলবে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত। ১০ এপ্রিল, রাজশাহী ও সিলেট বিভাগ। ১১ এপ্রিল, খুলনা ও কুমিল্লা বিভাগ। ১২ এপ্রিল, ঢাকা ও বরিশাল বিভাগ। ১৩ এপ্রিল, ময়মনসিংহ ও ফরিদপুর বিভাগ।১৬ এপ্রিল, রংপুর ও চট্টগ্রাম বিভাগ।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।